স্টাফ রিপোর্টার
ঢাকা │ বৃহস্পতিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
অনলাইন জুয়া, পর্নোগ্রাফি ও অনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্মবান্ধব রাখতে সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট, অ্যাপ্লিকেশন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জুয়া, বেটিং এবং পর্নোগ্রাফি-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন ও প্রমোশনাল কনটেন্ট প্রচার হচ্ছে, যা দেশের আইনবিরোধী।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ধারা ২০(১) অনুযায়ী, জুয়া বা বেটিং-সংক্রান্ত পোর্টাল বা কনটেন্ট তৈরি, পরিচালনা, প্রচার বা উৎসাহ দেওয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। একইভাবে ধারা ২৫(১) অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি বা অনৈতিক কনটেন্ট প্রচার বা বিজ্ঞাপন প্রকাশও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের জন্য নির্দেশনা
সব জাতীয় ও অনলাইন পত্রিকা, নিউজ পোর্টাল, স্থানীয় ও আঞ্চলিক মিডিয়া এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সংস্থাকে জানানো হয়েছে—তারা কোনোভাবেই জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি-সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন প্রচার করতে পারবে না। এমন বিজ্ঞাপন প্রচার সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থার আওতায় আসবে।
ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য নির্দেশনা
মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তাঁরা যেন জুয়া, বেটিং বা অনৈতিক সেবা বা পণ্যের বিজ্ঞাপনে অংশ না নেন। এসব কার্যক্রমে সম্পৃক্ততা সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপের ওপর নজরদারি
বাংলাদেশে পরিচালিত বা বাংলাদেশি ব্যবহারকারীদের জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য যেকোনো দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট ও অ্যাপে জুয়া, বেটিং বা পর্নো কনটেন্ট প্রচার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (NCSA) এসব কনটেন্ট মনিটরিং জোরদার করেছে এবং প্রয়োজনবোধে সংশ্লিষ্ট সাইটের বিরুদ্ধে ব্লকিং, জরিমানা বা আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গুগল, মেটা ও মোবাইল কোম্পানির জন্য নির্দেশনা
গুগল অ্যাডসেন্স, মেটা অ্যাড, মোবাইল কোম্পানি ও আইএসপিগুলোকে স্থানীয় আইন মেনে ফিল্টারিং ও পপ-আপ ব্লকিং নীতি কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওয়েবসাইট ও অ্যাপগুলোকে কাস্টমাইজ করে জুয়া ও পর্নো বিজ্ঞাপন রোধের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
সরকারের বার্তা
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “জুয়ার বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে। আইন ভঙ্গ হলে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইট বা প্ল্যাটফর্ম ব্লক করা হবে।”
যে কেউ অনলাইনে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি-সংক্রান্ত কনটেন্ট দেখতে পেলে তা notify@ncsa.gov.bd ঠিকানায় রিপোর্ট করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
সরকার জানিয়েছে, একটি নিরাপদ ও নৈতিক ডিজিটাল সমাজ গঠনে সিআইডি, বিটিআরসি, এনসিএসএ, এনটিএমসি, এনএসআই এবং বিএফআইইউ যৌথভাবে কাজ করছে।