আগরতলা, শুক্রবার:
ভারতের ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে টিপরা মথা পার্টির যুব সংগঠন যুব টিপরা ফেডারেশন (ওয়াইটিএফ)। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর একটি বক্তব্যের প্রতিবাদে শুক্রবার এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম নিউজ নাউ–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, শত শত ওয়াইটিএফ কর্মী বিক্ষোভে অংশ নেন এবং হাসনাত আবদুল্লাহর বক্তব্যের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে বাংলাদেশ যেন ‘কুদৃষ্টি’ না দেয়, সে বিষয়ে সতর্কবার্তা দেন।
সম্প্রতি ঢাকায় এক সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে বিশৃঙ্খলা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিকারীদের ভারত আশ্রয় দিচ্ছে। ওই বক্তব্যে তিনি ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকিও দেন।
বিক্ষোভকারীরা বাংলাদেশ সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ভারতের অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে যুব টিপরা ফেডারেশনের সভাপতি সুরজ দেববর্মা সাংবাদিকদের বলেন, সংকটের সময় ভারত পাহাড়ের মতো বাংলাদেশের পাশে দাঁড়িয়েছিল এবং ভারতের অমূল্য অবদানেই আজকের বাংলাদেশের অস্তিত্ব গড়ে উঠেছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে সুরজ দেববর্মা আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়ে বলেন, বাংলাদেশ যদি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে নিজেদের ভূখণ্ডে অন্তর্ভুক্ত করার স্বপ্ন দেখে, তবে এই অঞ্চলের মানুষও সমুদ্রে যাওয়ার পথ দাবি করতে পারে। তিনি আরও বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসকারী অনেক মানুষের জাতিগত ও সাংস্কৃতিক পরিচয় ত্রিপুরার মানুষের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। বাংলাদেশ যদি উত্তর-পূর্ব ভারতকে বিচ্ছিন্ন করার হুমকি দেয়, তবে ভারতের সঙ্গে পার্বত্য চট্টগ্রামকে যুক্ত করার দাবিও তোলা হতে পারে।
গত বছরের ডিসেম্বরে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলার ঘটনার প্রেক্ষাপটে শুক্রবারের বিক্ষোভ কর্মসূচিকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়। পশ্চিম ত্রিপুরার পুলিশ সুপার নমিত পাঠক জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস (টিএসআর) ও সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) মোতায়েন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় এক সমাবেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ভারত যদি বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা নষ্টের চেষ্টা করে, তবে বাংলাদেশও ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে আশ্রয় দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোকে ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেবে।