
নিজস্ব প্রতিবেদক:
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের নামে প্রহসন হবে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের। তিনি বলেছেন, বর্তমানে দেশে সরকারি ও আধা সরকারি দলের মধ্যে প্রতিযোগিতার প্রস্তুতি চলছে, যা প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক নির্বাচন নয়।
শনিবার (৪ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) মিলনায়তনে জাতীয় মহিলা পার্টির মতবিনিময় সভায় এসব মন্তব্য করেন তিনি।
জি এম কাদের বলেন, “শেখ হাসিনার সময় ছিল দলের সঙ্গে দলের প্রতিযোগিতা। এখন সরকারি এবং আধা সরকারি দলের মধ্যে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সরকারি দল, আর বিএনপি আধা সরকারি দল।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “এনসিপির দুজন সদস্য সরকারে আছে, তারা প্রটোকল পাচ্ছে। জামায়াতসহ তারা সরকারের সব সুবিধা ভোগ করছে। অন্যদিকে বিএনপি আধা সরকারি দল হিসেবে ক্ষমতায় আসার আশায় রয়েছে।”
জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান আরও বলেন, “এখনো ৫০ শতাংশের বেশি মানুষকে বাইরে রেখে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। শেখ হাসিনার সময়ও তা-ই হয়েছিল, এখন প্রশাসনিক আদেশে করা হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “দেশের ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিতে পুলিশ প্রশাসন, বিচার বিভাগ সব জায়গায় প্রভাব বিস্তার করা হচ্ছে। সংবিধান ও শাসনব্যবস্থা নিজেদের মতো করে সাজানো হচ্ছে। জনগণ তাদের সেই ম্যান্ডেট দেয়নি। ক্ষমতার লোভ ভালো না, এর পরিণতি অতীতে আমরা দেখেছি।”
অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ নয় উল্লেখ করে জি এম কাদের বলেন, “নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হওয়া উচিত। সরকারি ও আধা সরকারি দলের মধ্যে নির্বাচন হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এতে বিনিয়োগ আসবে না, দেশ বিপর্যয়ের দিকে যেতে পারে।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার মনে করছে, জি এম কাদেরবিহীন জাতীয় পার্টিকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। কিন্তু জাতীয় পার্টি কোনোদিন দোসরগিরি করেনি। যারা দালালি করেছে, তারা চলে গেছে। মামলা দিয়ে আমাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।”
নারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “একটি দলের নেতা বলেছেন, তারা নির্বাচিত হলে মেয়েরা মেয়েদের সামনে নাচবে—এটা দেশের মানুষ কখনো মেনে নেবে না। মহিলাদের চামড়া দিয়ে ডুগডুগি বাজানোর হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এখন থেকেই সচেতন হতে হবে।”
একাত্তর প্রসঙ্গে জি এম কাদের বলেন, “প্রজন্ম একাত্তর একটি সভা করেছিল, সেখানে যারা হইচই করল, তাদের কিছু বলা হলো না। এতে বার্তা দেওয়া হলো, একাত্তর নিয়ে কথা বলা যাবে না। যারা যুদ্ধের সময় স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করেছে, তাদের কাছ থেকে এখন নীতি শেখানো হচ্ছে—এটা মেনে নেওয়া যায় না।”
সভায় জাতীয় মহিলা পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক হেনা খান পন্নীর সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব শামীম হায়দার পাটোয়ারী, কো-চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজি সাইফুদ্দীন আহমেদ মিলন, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, আলমগীর শিকদার লোটন প্রমুখ।