১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আদালতে হাজিরা দিতে এসে লাশ হয়ে ফিরলে বিচার চাইব কার কাছে’ — খুলনার জোড়া খুনে নিহত রাজনের বাবার কান্না

admin
প্রকাশিত ০৩ ডিসেম্বর, বুধবার, ২০২৫ ২৩:২৩:৪০
আদালতে হাজিরা দিতে এসে লাশ হয়ে ফিরলে বিচার চাইব কার কাছে’ — খুলনার জোড়া খুনে নিহত রাজনের বাবার কান্না

Manual2 Ad Code

খুলনার আদালত এলাকায় জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত ফজলে রাব্বি রাজনের বাবা মো. এজাজ শেখ বলেছেন, ‘‘আদালতে হাজিরা দিতে এসে লাশ হয়ে ফিরলে কার কাছে বিচার চাইব?’’ নিরাপত্তাহীনতার ভয় ও হতাশা থেকে তিনি জানান, এ ঘটনায় তিনি কোনো মামলা করবেন না।

Manual3 Ad Code

যদিও ঘটনার দুই দিন পর আজ বুধবার খুলনা সদর থানায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৬ জনকে আসামি করা হয়েছে। তবে নিহত দুই পরিবারের কেউই নিরাপত্তার অভাবে মামলা করতে রাজি হননি।

Manual1 Ad Code

নিহত রাজনের বাবা এজাজ শেখ বলেন, ‘‘আমার একমাত্র ছেলেকে তারা মেরে ফেলেছে। মামলা করলে কি সে ফিরে আসবে? আমার পরিবারের নিরাপত্তা কে দেবে? আমি বিচার আল্লাহর কাছে দিলাম—তিনি উত্তম বিচারক।” তিনি আরও বলেন, ‘‘চারদিকে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের বাসা–অফিস। এমন জায়গায় যদি নিরাপত্তা না থাকে, মানুষ কোথায় যাবে?’’

রাজনের বাবা জানান, বন্ধুর উপকার করতে গিয়ে তাঁর ছেলে মিথ্যা মামলায় জড়ায়। জেলে থাকা অবস্থায় তাঁর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলাসহ ছয়টি মামলা দেওয়া হয়। সেই মামলায় হাজিরা দিতে এসে আদালত গেটের সামনে সন্ত্রাসীদের গুলিতে তার মৃত্যু হয়।

Manual6 Ad Code

হত্যাকাণ্ডে আটক রিপন নির্দোষ দাবি পরিবারের

Manual7 Ad Code

অন্যদিকে ৫৪ ধারায় আটক রিপন শেখ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তাঁর পরিবার ও নিহত হাসিব হাওলাদারের ছোট ভাই সুমন হাওলাদার। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে সুমন জানান, পরিবারের নিরাপত্তার কারণে তাঁরা মামলা করবেন না। রিপন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘সে আমার ঘনিষ্ঠ বন্ধু, তাকে হয়রানি করার জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’’

রিপনের স্ত্রী আঁখি বলেন, ঘটনার সময় রিপন ফকিরহাটের ফলতিতা পাইকারি মাছের বাজারে ছিলেন এবং সেই ভিডিও ফুটেজও রয়েছে। তিনি ‘ইহুদি’ বাহিনীর সদস্য নন বলেও দাবি করেন।

ঘটনার পটভূমি

গত রোববার (৩০ নভেম্বর) খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রধান গেটের সামনে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা করা হয় হাসিব হাওলাদার ও ফজলে রাব্বি রাজনকে। দুজনই কথিত ‘পলাশ বাহিনী’র সদস্য ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, এ হত্যাকাণ্ডে শীর্ষ সন্ত্রাসী রনি চৌধুরী বাবু ওরফে গ্রেনেড বাবুর সম্পৃক্ততার তথ্য পাওয়া গেছে।

খুনের পর থেকে নিহতদের পরিবার আতঙ্কে রয়েছেন। পুলিশের মামলাটি অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হলেও পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ মামলা না করায় ঘটনার বিচার নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।