
কাতার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ — প্রায় আট মাস তালেবানের কারাগারে বন্দী থাকার পর ব্রিটিশ দম্পতি পিটার রেনল্ডস (৮০) ও তাঁর স্ত্রী বার্বি রেনল্ডস (৭৬) মুক্তি পেয়েছেন। কাতারের মধ্যস্থতায় মুক্তিপ্রাপ্ত দম্পতিকে প্রথমে দোহায় নেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য, এরপর তারা যুক্তরাজ্যে ফেরার পথে থাকবেন।
পিটার ও বার্বি রেনল্ডসকে গত ১ ফেব্রুয়ারি আফগানিস্তান থেকে দেশে ফেরার সময় তালেবান আটক করেছিল। তবে আটকির কারণ এখনও স্পষ্ট করে বলা হয়নি। তালেবান জানিয়েছে, দম্পতিকে আফগান আইনের লঙ্ঘনের দায়ে আটক করা হয়েছিল এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
১৯৭০ সালে আফগানিস্তানের কাবুলে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ এই দম্পতি দীর্ঘ প্রায় দুই দশক বামিয়ান প্রদেশে বসবাস করছিলেন এবং সেখানে একটি দাতব্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পরও তারা আফগানিস্তানে অবস্থান করে আসছিলেন, যা তাঁদের পরিবারের সদস্যরা আফগানিস্তানের প্রতি গভীর ভালোবাসার কারণে বলে উল্লেখ করেছেন।
তবে তালেবানের কারাগারে বন্দীদশা ছিল চরম শোচনীয়। তাঁদের ছেলে জোনাথন রেনল্ডস জানান, পিটার খিঁচুনি ও অন্যান্য শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন এবং বার্বি অপুষ্টি ও অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত ছিলেন। তারা ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত অন্ধকার বেসমেন্টে রাখা হয়েছিল এবং পিটারকে হত্যাকারী ও অপরাধীদের সঙ্গে শিকলবন্দী করা হয়েছিল। জাতিসংঘও সতর্ক করেছিল, যথাযথ চিকিৎসা না পেলে দম্পতির জীবন বিপন্ন হতে পারে।
মার্কিন বন্দী ফেই হল জানিয়েছেন, রেনল্ডস দম্পতি কারাগারে ‘প্রায় মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে’ পৌঁছে গিয়েছিলেন।
কাতারের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মুক্তির শেষ পর্যায়ে তাদের কাবুলের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে একটি উন্নত ও সুবিধাসম্পন্ন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়, যেখানে কাতারের দূতাবাস ওষুধ, চিকিৎসা ও পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছে। তবে তালেবান দাবি করেছে, তাদের যথাযথ চিকিৎসা ও মানবাধিকার রক্ষা করা হয়েছে।