
১৪ বছরের অপেক্ষার পর এশিয়ার নবীন রাষ্ট্রের স্বপ্নপূরণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
এশিয়ার সবচেয়ে নবীন রাষ্ট্র পূর্ব তিমুর (তিমুর-লেস্তে) আজ রোববার দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ানে (ASEAN) আনুষ্ঠানিকভাবে ১১তম সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে যুক্ত হয়েছে।
প্রায় ১৪ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষার পর এই সদস্যপদ পেল দেশটি। পর্তুগিজ শাসনের সময় প্রায় অর্ধশতাব্দী আগে স্বাধীনতার পাশাপাশি আঞ্চলিক জোটভুক্ত হওয়ার যে স্বপ্ন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট হোসে রামোস-হোর্তা দেখেছিলেন, আজ তারই পূর্ণতা ঘটল।
রয়টার্স জানায়, মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালালামপুরে আয়োজিত আসিয়ানের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে পূর্ব তিমুরের পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে দেশটির আনুষ্ঠানিক অন্তর্ভুক্তি ঘটে।
সেই মুহূর্তে করতালিতে মুখর হয়ে ওঠে পুরো হলরুম।
পূর্ব তিমুরের প্রধানমন্ত্রী জানানা গুসমাও একে দেশের জন্য ‘নতুন সূচনা’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন,
“এই নতুন অধ্যায় আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অসীম সুযোগ এনে দেবে।”
প্রায় ১৪ লাখ জনসংখ্যার এই দেশটি এশিয়ার অন্যতম দরিদ্র রাষ্ট্র। প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ক্ষুদ্র অর্থনীতির দেশটি এখন আশা করছে, আসিয়ানের ৩.৮ ট্রিলিয়ন ডলারের সম্মিলিত অর্থনৈতিক কাঠামোতে যুক্ত হয়ে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলবে।
গুসমাও আরও বলেন,
“তিমুর-লেস্তের জনগণের জন্য এটি শুধু একটি স্বপ্নপূরণ নয়, বরং আমাদের দীর্ঘ সংগ্রামের স্বীকৃতি। আমাদের গণতন্ত্র জন্ম নিয়েছে লড়াইয়ের ভেতর থেকে—এটি কোনো যাত্রার সমাপ্তি নয়।”
তিন শতাব্দী ধরে পর্তুগালের উপনিবেশ থাকার পর ১৯৭৫ সালে পূর্ব তিমুর স্বাধীন হয়। তবে শিগগিরই দেশটি ইন্দোনেশিয়ার দখলে চলে যায়। দীর্ঘ রক্তাক্ত সংগ্রামের পর ২০০২ সালে দেশটি পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে।
১৯৯৬ সালে নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী রামোস-হোর্তা ১৯৭০-এর দশকেই আসিয়ানে যোগদানের ধারণা দেন। তাঁর লক্ষ্য ছিল আঞ্চলিক সংহতির মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা।
সম্প্রতি চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রামোস-হোর্তা বলেন,
“আমরা আসিয়ানের ওপর কোনো বোঝা হতে চাই না। বরং সীমান্তবিরোধ বা দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে মতবিরোধের মতো বিষয়ে আমাদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিতে পারি।”
তিনি আরও যোগ করেন,
“আমরা চাই আসিয়ানের প্রতিটি দেশ আলোচনার সংস্কৃতি ও শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রক্রিয়াকে আরও শক্তিশালী করুক।”