২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

আ.লীগের এক নেতার জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি ভুমি দখল, আধিপত্য বিস্তার, নির্যাতন সহ অভিযোগ

admin
প্রকাশিত ২০ জুলাই, রবিবার, ২০২৫ ১৪:৫২:১৭
আ.লীগের এক নেতার জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সরকারি ভুমি দখল, আধিপত্য বিস্তার, নির্যাতন সহ অভিযোগ

Manual2 Ad Code

ছাতক প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ছাতকের নোয়ারাই ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক, দক্ষিণ গোদাবাড়ি গ্রামের মৃত আবদুর রহিমের ছেলে আবদুল মমিনের বিরুদ্ধে সরকারী ভূমি দখল-বিক্রিসহ নানান অভিযোগ উঠেছে। জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে ভুমি দখল, আধিপত্য বিস্তার, নির্যাতনসহ বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি পেশায় একজন দলীল লেখক হওয়ায় ওই পেশাকে অসৎ ভাবে কাজে লাগিয়ে ওয়ারিশান সার্টিফিকেট ছাড়াই নামে-বেনামে একাধিক দলীল সম্পাদন করে জায়গা সম্পত্তি নিজের দখলে নিয়েছেন। শুধু তাই না, সরকারী খাস টিলারকম প্রায় অর্ধ শতাধিক একর ভূমি নিয়মবহির্ভূত ভাবে ভোগ দখল করে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগও পাওয়া গেছে। টিলার গাছ-গাছালিসহ সরকারী সম্পদকে নিজের পৈতৃক সম্পত্তি মনে করে শতশত গাছ বিক্রির উদ্যোগও নিয়েছেন তিনি। প্রায় এক যুগ ধরে এমন কর্মকান্ড করে আসলেও ক্ষমতার দাপটে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি কেউ।

ভুক্তভোগীদের কাগজপত্র ঘাটাঘাটি করে দেখা যায়, এসএ রেকর্ডে ৪১ শতক ভূমির মালিক ছিলেন দক্ষিণ গোদাবাড়ি গ্রামের মৃত ইছাক আলীর ছেলে আবদুল খলিল। ভূমিটি ১৯৫৬ সালের ১৯ মে ২৭৭৩ নং দলীল মূলে তিনি একই গ্রামের মৃত ইব্রাহিম আলীর ছেলে কাছিদ আলী ও আবদুর রহিমের কাছে চৌহাদ্দামূলে বিক্রি করেন। একই ভূমি ১৯৬৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারী ৬১৩নং দলীল মুলে একই গ্রামের মৃত আবদুর রশিদের ছেলে জমির আলী ও মিছির আলী ওরফে সদু মিয়ার কাছে বিক্রি করেন আবদুর রহিম ও কাছিদ আলী। পরে ওই ৪১শতক ভুমি থেকে গোদাবাড়ি গ্রামের মৃত আছদ্দর আলীর ছেলে আবদুল কাদিরের কাছে ২৩ শতক বিক্রি করেন মিছির আলী ওরফে সদু মিয়া। ক্রয়কৃত ভূমিতে মিছির আলী ওরফে সদু মিয়া ঘরবাড়ি ও দোকানকোঠা নির্মাণ করে ভোগ দখল করে আসছিলেন।

কিন্তু জমির আলীর অবশিষ্ট ১৮ শতক ভূমি গ্রামের আবদুল হেলিমের ছেলে ফজলুর রহমান ও আবদুর রহমান গংদের মালিক সাজিয়ে ২০২০ সালের ২৩ নভেম্বর ২৭১৭নং দলীল সৃষ্টি করে ৩.৫৫ শতকের মালিক সাজেন আওয়ামীলীগ নেতা আবদুল মমিন।

Manual1 Ad Code

এরপর একই দাগে ও একই চৌহাদ্দায় ২০২১ সালের ২ ফেব্রুয়ারী গ্রামের মৃত আবদুল খালিক কে ভুয়া উত্তরাধিকারী সাজিয়ে ৪৪২নং আরেকটি দলীল সৃষ্টি করে অবশিষ্ট ১৫ শতকের মালিক বনে যান আবদুল মমিন। অভিযোগ উঠেছে আবদুল মমিন দলীল লেখক হওয়ায় এবং আওয়ামীলীগের শক্তি ব্যবহার করে ওই সময়ের অসাধু কর্মকর্তাদের মাধ্যমে মাত্র তিন মাসের ভেতরে দুটি ভুয়া দলীল সৃষ্টি করেছেন। এরপর ভূমি দখল করে স্থানীয় চৌমুহনী বাজারে একটি বিল্ডিং নির্মাণ করেছেন তিনি। যে কারণে তার বিরুদ্ধে আদালতে জালজালিয়াতি সহ উচ্ছেদ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী জমির আলী। যা এখনো বিচারাধীন। অন্যদিকে আবদুল মমিনের কাছ থেকে স্ট্যাম্পের মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা হারে সরকারী টিলা ক্রয় করে বাড়ি নির্মাণের বিষয় স্বীকার করেছেন বসবাসকারী এক নারী৷ এছাড়া নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারী টিলা ক্রয় বিক্রয়ের বিষয় নিশ্চিত করেছেন গ্রামের অনেকেই। যা তাদের বক্তব্য প্রতিনিধির হাতে সংরক্ষণ রয়েছে।

Manual8 Ad Code

অভিযুক্ত আবদুল মমিন তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সরকারী ভূমি বিক্রি করা যায় না। কিন্তু এই এলাকায় টিলা বিক্রির শতশত প্রমান আছে। মুলত বিক্রির মাধ্যমে দখল সমজানোর কাগজ দেওয়া হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে একটি চক্র অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ করেন তিনি।

Manual5 Ad Code

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু নাছের বলেন, সরকারী টিলা বিক্রির বিষয়ে তহশীলদারকে পাঠিয়ে খোঁজখবর নিয়ে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Manual4 Ad Code

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সরকারী ভূমি বা টিলা ক্রয় বিক্রয়ের বিষয় তদন্ত করে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।