১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইউনূস-রুবিওর যৌথ প্রতিশ্রুতি

admin
প্রকাশিত ০১ জুলাই, মঙ্গলবার, ২০২৫ ০০:২১:৩২
ইউনূস-রুবিওর যৌথ প্রতিশ্রুতি

Manual5 Ad Code

ইন্দো-প্যাসেফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা জোরদারে যৌথ প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় এক ফোনালাপে তাঁরা এই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ট্যামি ব্রুস জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ সোমবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন। উভয়েই যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পাশাপাশি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রতি অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

Manual2 Ad Code

এদিকে, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ফোনালাপ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রী মার্কো রুবিও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থনের কথা জানিয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দুই নেতা ১৫ মিনিটের মতো কথা বলেন। এই আলোচনা ছিল উষ্ণ, হৃদ্যতাপূর্ণ ও গঠনমূলক, যা দুই দেশের দৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রতিফলন ঘটায় বলে প্রেস উইংয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা জানান হয়।

Manual2 Ad Code

আলোচনায় উভয় নেতা পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে কথা বলেন, যার মধ্যে ছিল বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা, চলমান সংস্কার প্রক্রিয়া, গণতন্ত্রে উত্তরণের পথরেখা, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সহায়তা।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বাংলাদেশের সংস্কার কর্মসূচি এবং আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনের কথা জানান।

বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি গন্তব্য ও বৈদেশিক রেমিট্যান্সের শীর্ষ উৎস হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা তুলে ধরে উভয় নেতা শিগগিরই শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন, যা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করবে।

অধ্যাপক ইউনূস জানান, তার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্রের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মি. ল্যান্ডাউ-এর সঙ্গে অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি বৈঠক করেছেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারে উভয় পক্ষের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের ওপর আরোপিত পাল্টা শুল্ক ব্যবস্থা ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার তার অনুরোধে ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার জন্য। তিনি বলেন, ‘আমরা আপনার কর্মকর্তাদের সঙ্গে মিলে একটি কার্যকর প্রস্তাব প্যাকেজ চূড়ান্ত করার কাজ করছি, যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।’

গণতন্ত্রে উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন কামনা করে প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস পুনরায় জানান, আগামী বছরের শুরুতেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চলমান সংলাপ দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার বহুল প্রত্যাশিত সংস্কারের পথ তৈরি করবে।

তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী ব্যবস্থাকে পুনর্গঠনের জন্য কঠোর পরিশ্রম করছে, যা আগের সরকার পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়েছিল। আমাদের তরুণেরা এবারই প্রথমবারের মতো ভোট দেওয়ার সুযোগ পাবে।

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের উদার সহায়তা অব্যাহত রাখায় ওয়াশিংটনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ২০১৭ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র রোহিঙ্গা সংকট মোকাবেলায় শীর্ষ দাতা দেশ হিসেবে অবদান রাখছে।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার টেকসই সমাধান ও প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা বর্তমানে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি এবং বাংলাদেশ এই প্রক্রিয়ায় কাজ করে যাচ্ছে।

Manual2 Ad Code

দুই নেতা ভূরাজনৈতিক বিষয়েও আলোচনা করেন, যার মধ্যে ছিল শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা এবং বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক।

প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের পূর্বে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে বলেন, আপনার উপস্থিতি আমাদের তরুণদের অনুপ্রাণিত করবে।

Manual4 Ad Code

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট থেকে দেওয়া বিবৃতিতে মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আজ (সোমবার) বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রতি তাদের অভিন্ন প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।