ঢাকার মহানগর দায়রা জজ ও সিনিয়র বিশেষ জজ আদালত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তাঁর দুই ভাইয়ের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড অ্যালার্ট জারির নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিচারক মো. সাব্বির ফয়েজ এ আদেশ দেন।
দুদকের আবেদনের ভিত্তিতে এ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। অভিযুক্ত অন্য দুই ভাই হলেন গ্রুপটির ভাই চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ এবং পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান।
অভিযোগ
দুদকের আবেদনে বলা হয়,
-
অভিযুক্তরা ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে মিথ্যা দলিল তৈরি করে ঋণের নামে নেওয়া ১০৪ কোটি ২০ লাখ টাকার বেশি আত্মসাৎ করেছেন।
-
এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডের নামে ৩৪০ কোটি টাকা পাচার করেছেন।
-
তদন্ত চলাকালীন তাঁদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা ব্যর্থ হলে দুদকের নজরে আসে, তাঁরা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে গেছেন।
পূর্বের মামলা ও ব্যবস্থা
এস আলম গ্রুপ ও তাদের কর্ণধার পরিবারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একাধিক মামলা রয়েছে—
-
ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ লাখ ৯২ কোটি টাকা (ডিসেম্বর ২০২৪), ৯১৮ কোটি টাকা (জানুয়ারি ২০২৫), ১ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা (মার্চ ২০২৫) আত্মসাতের অভিযোগ।
-
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক থেকে ১ হাজার ১০২ কোটি টাকা (মে ২০২৫), ৮৯ কোটি টাকা (আগস্ট ২০২৫), ২০৭ কোটি টাকা (সেপ্টেম্বর ২০২৫) আত্মসাতের অভিযোগ।
-
পে-অর্ডার জালিয়াতির মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা (সেপ্টেম্বর ২০২৫) আত্মসাৎ মামলা।
এ ছাড়া আদালতের নির্দেশে—
-
পরিবার ও স্বার্থসংশ্লিষ্টদের নামে থাকা হাজার একর জমি, শত শত ব্যাংক হিসাব ও হাজার কোটি টাকার শেয়ার অবরুদ্ধ বা ক্রোক করা হয়েছে।
-
বিদেশেও (ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, জার্সি ও সাইপ্রাসে) এস আলম পরিবারের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।
-
ইতোমধ্যে তাঁদের বিদেশযাত্রায়ও নিষেধাজ্ঞা জারি রয়েছে।
সারসংক্ষেপ
অর্থ আত্মসাৎ, পাচার, অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকিসহ নানা অভিযোগে জর্জরিত এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলম মাসুদ ও তাঁর পরিবার। সর্বশেষ আদালতের নির্দেশে তাঁদের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারি হতে যাচ্ছে, যা তাঁদের আন্তর্জাতিকভাবে গ্রেপ্তারের পথ সুগম করবে।