
মানুষ জন্মগতভাবেই কিছু অধিকার নিয়ে পৃথিবীতে আসে, যা তাকে মর্যাদাপূর্ণ জীবন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তা দেয়। ইসলামে মানবাধিকারকে আল্লাহ প্রদত্ত চিরন্তন অধিকার হিসেবে দেখা হয়। জীবন, মর্যাদা, সম্পদ, শিক্ষা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং ন্যায়বিচার—এসবই ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান দ্বারা সুরক্ষিত।
কোরআনে বলা হয়েছে—
“যে ব্যক্তি কোনো প্রাণকে হত্যা করল, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করল। আর যে ব্যক্তি একটি প্রাণকে বাঁচাল, সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে বাঁচাল।” (সুরা মায়িদা: ৩২)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“একজন মুসলমানের রক্ত অপর মুসলমানের জন্য বৈধ নয়, তবে ন্যায়সংগত কারণে।” (সহিহ্ বুখারি ও সহিহ্ মুসলিম)
আল্লাহ বলেন—
“আমি আদমসন্তানকে মর্যাদাপূর্ণ করেছি।” (সুরা ইসরা: ৭০)
“তোমরা একে অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না।” (সুরা নিসা: ২৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বিদায় হজে ঘোষণা করেন—
“তোমাদের রক্ত, সম্পদ ও সম্মান একে অপরের জন্য পবিত্র।” (সহিহ্ বুখারি, সহিহ্ মুসলিম)
ইসলামে নারী ও শিশুদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখিত।
কোরআনে বলা হয়েছে—
“কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়া হলে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে—কোন অপরাধে হত্যা করা হলো?” (সুরা তাকউইর: ৮-৯)
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন—
“যে ব্যক্তি দুই কন্যাকে সুন্দরভাবে লালন-পালন করবে, সে আমার সঙ্গে জান্নাতে থাকবে।” (সহিহ্ মুসলিম)
আরও বলেন—
“যে ছোটদের প্রতি দয়া করে না এবং বড়দের সম্মান করে না, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।” (সুনানে আবু দাউদ)
কোরআনে বলা হয়েছে—
“তাদের সম্পদে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের জন্য নির্ধারিত হক রয়েছে।” (সুরা জারিয়াত: ১৯)
ইসলামে দরিদ্র, এতিম ও অসহায়দের সহায়তাকে সামাজিক দায়িত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
কোরআনে বলা হয়েছে—
“ধর্মের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই।” (সুরা বাকারা: ২৫৬)
“হে ইমানদারগণ, তোমরা ন্যায়ের জন্য দাঁড়াও, নিজের স্বার্থের বিরুদ্ধে হলেও।” (সুরা নিসা: ১৩৫)
ইসলাম মানুষের অধিকারকে কেবল আইনগত নয়, বরং নৈতিক ও সামাজিক দায়িত্ব হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করেছে। জীবন, মর্যাদা, সম্পদ, নারী ও শিশুর অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচার—সবকিছুই আল্লাহর কিতাব ও রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর হাদিস দ্বারা সুরক্ষিত। তাই ইসলামের শিক্ষা মানবাধিকারের পূর্ণাঙ্গ দলিল।