সিলেট ২৬শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
প্রকাশিত: ১০:১৩ অপরাহ্ণ, মে ২৫, ২০২৫
পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। এতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন খামারিরা। কোরবানির ঈদের আগে গরুর এমন রোগে খামারিরা বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন। তবে খামারিদের আতঙ্কিত না হয়ে বরং সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা।
লাম্পি স্কিন রোগে গরুর মৃত্যুর হার কম হলেও এতে ঝুঁকি বাড়ছে দুগ্ধ, চামড়া ও মাংস শিল্পে। এ রোগে আক্রান্ত পশুর চামড়া অনেকটাই নষ্ট হয়ে যায়। আক্রান্ত গাভির দুধ উৎপাদন শূন্যের কোটায় নেমে আসে। বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, মূলত মশা ও মাছির মাধ্যমে ভাইরাসজনিত চর্মরোগটি সারা দেশে ছড়াচ্ছে। দুমকী উপজেলার লেবুখালী, আঙ্গারিয়া, পাঙ্গাসিয়া, মুরাদিয়া ও শ্রীরামপুর ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামের গরু কমবেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। এ রোগের প্রতিষেধক (ভ্যাকসিন) সরকারি পর্যায়ে সরবরাহ না থাকায় গরু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চরবয়েরা গ্রামের আ. জলিল জানান, তিনি চার-পাঁচটি গরু লালন-পালন করছেন। শাহি ওয়াল জাতের একটি গরু লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। চামড়ার অধিকাংশ জায়গায়ই পচন ধরেছে। অবশেষে তিনি হাসপাতালে নিয়ে এসেছেন চিকিৎসা করাতে। কোরবানির ঈদের চারদিকে যেভাবে গরুর এই রোগ ছড়াচ্ছে, তাতে তাঁর প্রতিটি দিন আতঙ্কে কাটছে। আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের রুপাশিয়া গ্রামের এখলাছ ও আ. মোতালেব বলেন, এ রোগে আক্রান্ত হয়ে দুটি বাছুর মরে গেছে। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের দুমকী গ্রামের সঞ্জীব দাস বলেন, লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরুটির চিকিৎসা করিয়েও কোনো লাভ হয়নি। গরুটি মরে গেছে। খামারি সহিদুল ইসলাম বলেছেন, এ রোগে গরু আক্রান্ত হলে তাঁর ঈদকেন্দ্রিক ব্যবসায় ধস নামবে। এতে ভীষণভাবে ক্ষতির মুখে পড়বেন তিনি।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ভেটেরিনারি সার্জন আশিক হাজরা বলেন, গরুর লাম্পি স্কিন রোগের (এলএসডি) সুনির্দিষ্ট ভ্যাকসিন সরকারিভাবে সরবরাহ নেই। বেসরকারি পর্যায়ে কিছু কোম্পানি ওষুধ বাজারজাত করছে। শুধু সচেতনতার মাধ্যমেই এ রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হয়। প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে বা সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন দমন করার জন্য ক্ষত স্থানে পভিসেপ অথবা ভায়োডিন দিয়ে ড্রেসিং করে বোরিক পাউডার বা সালফানিলামাইড পাউডার লাগানো যেতে পারে। অযথা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, এই রোগ প্রতিরোধে অসুস্থ পশুকে আলাদা করতে হবে। খামারের ভেতরের ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রেখে মশা-মাছির উপদ্রব কমিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। আক্রান্ত গরুকে খামারের শেড থেকে আলাদা করে অন্য স্থানে মশারি দিয়ে ঢেকে রাখলে অন্য গরুতে সংক্রমণ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। আক্রান্ত গাভির দুধ বাছুরকে খেতে না দিয়ে মাটিচাপা দেওয়া উচিত। আক্রান্ত গরুর ব্যবহার্য কোনো জিনিস সুস্থ গরুর কাছে আনা বা সেই গরুর খাবার অন্য গরুকে খেতে দেওয়া যাবে না। এই প্রাণিস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজের চিকিৎসায় গোট পক্সের ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে কাজে লাগতে পারে। তবে এ ভ্যাকসিনেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ২৫-৩০ দিন পর সাধারণত এমনিতেই রোগটি সেরে যায়। তাই লাম্পি স্কিন রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেলেই দ্রুত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বা রেজিস্টার্ড প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিচর্যার ব্যবস্থা করতে হবে। আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা: বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালিক,
উপদেষ্টা : খান সেলিম রহমান, জাতীয় দৈনিক মাতৃজগত পত্রিকা, ঢাকা ।
উপদেষ্টা : মোহাম্মদ হানিফ,
প্রকাশক : মোঃ ফয়ছল কাদির,
সম্পাদক : মাছুম কাদির,
সিলেট অফিস : রংমহল টাওয়ার(৪র্থ তলা) বন্দরবাজার সিলেট,৩১০০। মোবাইল নং-০১৭১৮৬২০২৯১,
ই-মেইল : Foysolkadir503@gmail.com,
Design and developed by DHAKA-HOST-BD