উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং-উনের কন্যা, যাকে অনেকে কিম জু এ নামে জানে, সম্প্রতি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে। তার বয়স আনুমানিক ১২–১৩ বছর। সরকারিভাবে নাম বা বয়স প্রকাশ করা হয়নি, তবে দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তাকে ভবিষ্যতের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে প্রস্তুত করা হচ্ছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি কিম জং-উনের সঙ্গে চীনের প্রথম বিদেশ সফরে কিম জু এ বাবার পাশে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে দেখা গেছে। ট্রেন থেকে নামার সময় বাবার ঠিক পেছনে ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী চোয়ে সন হুইয়ের আগে দাঁড়িয়ে ছিল সে। দূতাবাস কর্মকর্তাদের অভ্যর্থনা গ্রহণের সময় হাততালি দিতে দেখা গেছে। বৈঠকেও বাবার পাশে বসে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় অংশ নিয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনআইএস) জানিয়েছে, এই সফরের মাধ্যমে কিম জু এর অবস্থান আরও সুদৃঢ় হয়েছে। চীন সফরের উদ্দেশ্য ছিল তাকে আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা দেওয়ার পাশাপাশি উত্তরাধিকারীর মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করা। দেশটির আইনপ্রণেতা পার্ক সনওয়ন বলেন, উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে জু এর উপস্থিতি সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে প্রচারিত হয়েছে।
কিম জু এ-কে প্রথমবার জনসমক্ষে দেখা যায় ২০২২ সালের নভেম্বরে, একটি আন্তর্মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সময়। তারপর থেকে সে নিয়মিত সামরিক মহড়া, নৌবাহিনীর উদ্বোধন, অর্থনৈতিক প্রকল্প এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হচ্ছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এসব সুপরিকল্পিত উপস্থিতি উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতা উত্তরাধিকারের ইঙ্গিত বহন করছে। তবে অন্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিম জং-উন এখনো তরুণ এবং দেশটির ক্ষমতার কাঠামো পুরুষপ্রধান; তাই কন্যাকে এত দ্রুত উত্তরাধিকারী ঘোষণা করা বাস্তবসম্মত নাও হতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সব নেতা পুরুষই হয়েছেন—কিম ইল সুং থেকে কিম জং-ইল এবং তারপর কিম জং-উন। এই প্রেক্ষাপটে কিম জু এ-র উত্থান দেশটির ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে নতুন অধ্যায়ের ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে।