১৮ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩রা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৭শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চীনে পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বের সর্বোচ্চ অসমাপ্ত গগনচুম্বী ভবনের নির্মাণকাজ আবার শুরু হতে যাচ্ছে।

admin
প্রকাশিত ২৫ এপ্রিল, শুক্রবার, ২০২৫ ২১:৫১:১০
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চীনে পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বের সর্বোচ্চ অসমাপ্ত গগনচুম্বী ভবনের নির্মাণকাজ আবার শুরু হতে যাচ্ছে।

Manual5 Ad Code

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চীনে পরিত্যক্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বের সর্বোচ্চ অসমাপ্ত গগনচুম্বী ভবনের নির্মাণকাজ আবার শুরু হতে যাচ্ছে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, আগামী সপ্তাহেই এই কাজ শুরু হতে পারে।

এই বিষয়ে এক প্রতিবেদনে সিএনএন জানিয়েছে, চীনের তিয়ানজিন শহরে অবস্থিত ওই ভবনের নাম ‘গোল্ডিন ফিন্যান্স ১১৭ ’। ১ হাজার ৯৫৯ ফুট উঁচু ভবনটির কাজ ২০১৫ সাল থেকে বন্ধ ছিল অর্থনৈতিক সংকটের কারণে। তবে সেই শঙ্কা কাটিয়ে ২০২৭ সালের মধ্যে এই কাজ সমাপ্ত করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।

২০০৮ সালে যখন ভবনটির নির্মাণ শুরু হয়, তখন এটি চীনের সর্বোচ্চ ভবন হওয়ার কথা ছিল। ১১৭ তলার এই ভবনটির স্থাপত্য পরিকল্পনায় ভূমিকম্প ও প্রবল বাতাস প্রতিরোধে মেগা কলাম ব্যবহারের কথা ছিল। ওপরের অংশে হিরার আকৃতির একটি অ্যাট্রিয়ামে সুইমিং পুল ও পর্যবেক্ষণ ডেক রাখারও পরিকল্পনা ছিল। এতে অফিস এবং একটি পাঁচ তারকা হোটেল নির্মাণের কথা ছিল বলে জানিয়েছে স্থপতি প্রতিষ্ঠান ‘পিঅ্যান্ডটি গ্রুপ’।

Manual4 Ad Code

তবে ২০১৫ সালে চীনা শেয়ারবাজার ধসের পর হংকংভিত্তিক ডেভেলপার ‘গোল্ডিন প্রপার্টিজ হোল্ডিংসের’ ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা সুউং একসময় হংকংয়ের অন্যতম ধনী ব্যবসায়ী হলেও পরে তাঁর কোম্পানি দেউলিয়া হয়ে যায়।

চীনা রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, নতুন করে দেওয়া নির্মাণ অনুমতিপত্রে ৫৬৯ মিলিয়ন ইউয়ান (প্রায় ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার) মূল্যের একটি চুক্তির উল্লেখ আছে এবং এতে পূর্ববর্তী ডেভেলপারের নাম আর নেই। তবে ভবনের মূল পরিকল্পনা অপরিবর্তিত আছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে স্থপতি প্রতিষ্ঠান পিঅ্যান্ডটি গ্রুপ ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশল ফার্ম বিজিআই ইঞ্জিনিয়ারিং কনসালট্যান্ট কোনো মন্তব্য করেনি।

গত এক দশকে চীনে অসমাপ্ত অবস্থায় পরিত্যক্ত কয়েকটি গগনচুম্বী ভবন দেশটির রিয়েল এস্টেট সংকটের প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছে। ২০২০ সালে চীনা সরকার ৫০০ মিটারের বেশি উচ্চতার নতুন ভবন নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল যেন ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়।

তবে বর্তমানে তিয়ানজিন ভবন ছাড়াও চেংদু শহরে স্থগিত থাকা ৪৬৮ মিটার উঁচু চেংদু গ্রিনল্যান্ড টাওয়ারের কাজও পুনরায় শুরু হয়েছে। ডিউক ইউনিভার্সিটির আইনের অধ্যাপক এবং চীনা রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞ কিয়াও শিতোং মনে করেন, সরকার রিয়েল এস্টেট খাত পুনরুজ্জীবিত করতে সচেষ্ট হয়েছে।

Manual6 Ad Code

তিনি বলেন, ‘এই প্রকল্পগুলো লাভজনক না হলেও, এগুলো সরকারের আত্মবিশ্বাস ও বাজারে আস্থার প্রতীক হিসেবে কাজ করে।’

লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনাবিদ ফেই চেনের মতে, পরিত্যক্ত ভবন শহরের চেহারাকে কলঙ্কিত করে। তাই স্থানীয় সরকারগুলো এই সব প্রকল্প সম্পন্ন করতে আগ্রহী।

Manual7 Ad Code

গগনচুম্বী ভবন নির্মাণে চীনে এখনো বিশ্বে শীর্ষে রয়েছে। ২০২৪ সালে বিশ্বের ২০০ মিটারের বেশি উচ্চতার ১৩৩টি ভবনের মধ্যে ৯১টি নির্মিত হয়েছে চীনে।

এদিকে, তিয়ানজিনে ইতিমধ্যে ‘তিয়ানজিন সিটিএফ ফিন্যান্স সেন্টার’ নামে ৫৩০ মিটার উঁচু আরেকটি ভবন নির্মিত হয়েছে, যা বর্তমানে বিশ্বের অষ্টম সর্বোচ্চ ভবন। ফলে ‘গোল্ডিন ফিন্যান্স ১১৭’ এখন আর চীনের সর্বোচ্চ নয় বরং তৃতীয় সর্বোচ্চ এবং বিশ্বের ষষ্ঠ সর্বোচ্চ ভবন হিসেবে গণ্য হবে।

Manual5 Ad Code

ভবিষ্যতে সৌদি আরবে নির্মাণাধীন জেদ্দাহ টাওয়ার এবং দুবাইয়ের বুর্জ আজিজির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হলে, গোল্ডিন ভবনের অবস্থান আরও পিছিয়ে যাবে।