১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এজেন্সির অবহেলায় কেউ হজ্বে যেতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।

admin
প্রকাশিত ১০ ফেব্রুয়ারি, সোমবার, ২০২৫ ১৮:২৪:১০
এজেন্সির অবহেলায় কেউ হজ্বে যেতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।

Manual6 Ad Code

১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে হজ সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে সব চুক্তি সম্পন্ন করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই এই সময় বাড়ানো হবে না। এজেন্সির অবহেলায় কেউ হজে যেতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।

আজ সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এবার হজের জন্য ৮৭ হাজার ১০০ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫ হাজার ২০০ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮১ হাজার ৯০০ জন নিবন্ধন করেছেন। সরকারি ব্যবস্থাপনায় যাঁরা নিবন্ধন করেছেন তাঁদের সব চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাঁরা নিবন্ধন করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে অনেক এজেন্সি চুক্তি সম্পন্ন করতে ধীর গতি দেখা যাচ্ছে।

এখন পর্যন্ত কতজনের চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, সরকারি ব্যবস্থাপনায় সবার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৪৫ হাজার হজযাত্রীর সব চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এজেন্সিগুলোও তাদের অধীনে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য সৌদি সরকারের গাইডলাইন অনুসারে কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকের কার্যক্রম বেশ সন্তোষজনক, আবার অনেকে ধীর গতিতে চলছে। সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে হজ সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব চুক্তি সম্পাদনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এই ডেডলাইনের মধ্যে তাদের পক্ষ হতে সব চুক্তি সম্পন্ন করার জন্য তাগিদ দিচ্ছেন।

উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় হতে গতকাল রোববারও আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা পাঠানো হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে চুক্তি সম্পাদনের গতি খুবই শ্লথ এবং অনেক ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। ডেডলাইন ১৪ ফেব্রুয়ারি এবং এটা কোনোভাবেই বাড়ানো হবে না। বাংলাদেশ থেকে হজের জন্য নিবন্ধিত কোনো ভাই বা বোন যাতে হজ পালন করা থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয়ে আমাদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করেছেন।’

Manual2 Ad Code

উপদেষ্টা বলেন, হজ সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টি গত বছরের ২৩ অক্টোবর সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়। পরবর্তীকালে আরও কয়েকবার পত্র মারফত এ বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলোকে জানানো হয়েছে। গতকালই এজেন্সিদের তাগিদ পত্র দেওয়া হয়েছে। আজ সোমবার সকালেও সংশ্লিষ্ট এজেন্সি মালিক বা পরিচালকদের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সব চুক্তি শেষ করতে বলা হয়েছে। সৌদি সরকারের বেঁধে দেওয়া সময় ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কী কী চুক্তি করতে হবে সে তথ্য জানান উপদেষ্টা।

চুক্তিগুলো হলো:

১. মিনায় ও আরাফায় তাঁবু ও ক্যাটারিংয়ের জন্য সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি।

২. বাড়ি/হোটেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তি।

Manual6 Ad Code

৩. পরিবহন কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি এবং ক্যাটারিং নিতে আগ্রহী হলে ক্যাটারিং সেবাদানকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এজেন্সির অবহেলা বা গাফিলতির কারণে কোনো হজযাত্রী হজ করতে না পারলে সে দায় সংশ্লিষ্ট এজেন্সিকে নিতে হবে। এ দায় কোনোভাবেই সৌদি সরকার কিংবা ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় বহন করবে না।

এজেন্সির অবহেলায় কোনো হজযাত্রী হজ করতে না পারলে এজেন্সির বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, ‘এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল তো হবেই। আর্থিক জরিমানা করা হবে।’

উপদেষ্টা জানান, হজ ও ওমরাহ বিধিমালা ২০২২-এ সরকারি ব্যবস্থাপনার হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়া করার লক্ষ্যে ধর্মসচিবের নেতৃত্বে ১২ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি রয়েছে। কমিটি এ বছর সরকারি মাধ্যমের হজযাত্রীদের জন্য বাড়িভাড়ার কাজটি সম্পন্ন করেছে। এই কমিটি বাড়িভাড়া কোটেশনের পরিপ্রেক্ষিতে দরদাতাদের বাড়িগুলো পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করেছে। প্রাথমিকভাবে বাছাই করা বাড়িগুলো দুই বা ততোধিকবার সরেজমিন পরিদর্শন করেছে।

Manual4 Ad Code

উপদেষ্টা বলেন, ‘এ বছর সরকারি মাধ্যমে হাজিদের জন্য আমরা দুটি প্যাকেজ ঘোষণা করেছিলাম। সাধারণ হজ প্যাকেজ-১-এ নিবন্ধিত হজযাত্রীদের জন্য মক্কায় আমরা হারাম শরিফের বহির্চত্বর থেকে তিন কিলোমিটারের মধ্যে আবাসনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। সৌদি সরকারের বিধান অনুসারে হারাম শরিফ থেকে দুই কিলোমিটার দূরে হজযাত্রীদের জন্য হোটেল বা বাসা ভাড়া করা হলে সে ক্ষেত্রে আবশ্যিকভাবে পরিবহনের বন্দোবস্ত রাখতে হয়। আমরা এ উদ্দেশ্যে হজযাত্রী প্রতি ৩০০ রিয়াল ধরেই প্যাকেজ ঘোষণা দিয়েছিলাম।’

উপদেষ্টা বলেন, ‘হজের মৌসুমে অত্যধিক ভিড়ের কারণে অনেক সময় হারাম শরিফ থেকে দেড় থেকে দুই কিলোমিটারের মধ্যে বাস প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এ কারণে আমরা হাজিদের সুবিধার্থে প্যাকেজ-১-এর বাড়িভাড়া ও পরিবহন বাবদ টাকা সমন্বয় করে এই প্যাকেজের হাজিদের জন্য তিন কিলোমিটারের স্থলে দুই কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে বাড়িভাড়া নিয়েছি।’

Manual6 Ad Code

উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা তাদের জন্য যে বাড়িগুলো ভাড়া নিয়েছি তার সর্বোচ্চ দূরত্ব হবে ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার। বাড়িভাড়া কমিটির সদস্যদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এরূপ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ফলে সরকারি মাধ্যমের হাজিদের কষ্ট লাঘব হবে এবং হাজি হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও বহুলাংশে কমে যাবে।’

উপদেষ্টা বলেন, হজ প্যাকেজ-১-এর হজযাত্রীরা মিনায় জোন-৫-এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং হজ প্যাকেজ-২-এর হজযাত্রীরা মিনায় জোন-২-এর তাঁবুতে অবস্থান করবেন এবং সার্ভিস কোম্পানির সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি মোতাবেক সেখানে খাবারসহ অন্যান্য সুবিধাদি পাবেন।

তিনি বলেন, ‘হজের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেবা বিশেষ করে পরিবহন সেবা, লাগেজ লোডিং-আনলোডিংসহ অন্যান্য সেবার জন্য সৌদি সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক আমরা ইতিমধ্যে সব চুক্তি সম্পাদন করেছি। অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা বিশ্বস্ত হজ সেবা প্রদানকারী কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি সম্পাদন করেছি। আশা করি, এ বছর আমাদের হাজিরা সন্তোষজনক সেবা পাবেন।’