একসময় যেই ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের ছিল গর্বের ইতিহাস—২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল, ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল, দুইবার এশিয়া কাপের ফাইনাল—এখন সেটিই যেন রূপকথা। একসময় ভারত, পাকিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো শক্তিশালী দলের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের কীর্তি গড়া বাংলাদেশ এখন সেই সংস্করণেই সবচেয়ে বেশি ভুগছে।
সাম্প্রতিক ১১ ওয়ানডের মধ্যে ১০টিতেই পরাজিত হয়েছে বাংলাদেশ। সবশেষ চারটি ওয়ানডে সিরিজেও হার মেনেছে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন দল। অধিনায়কত্ব বদলে লাভ হয়নি; নাজমুল হোসেন শান্তর জায়গায় মিরাজ আসার পরও দলের পারফরম্যান্সে কোনো পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে হারের পর হতাশা প্রকাশ করেছেন সাবেক পেসার রুবেল হোসেন। ফেসবুকে তিনি লিখেছেন,
“আমরা চাই না ওয়ানডে সংস্করণ থেকে বাংলাদেশ হারিয়ে যাক। একটা সময় এই ফরম্যাটটাই ছিল আমাদের সবচেয়ে প্রিয়। অসংখ্য স্মরণীয় জয় আর গর্বের মুহূর্ত ছিল। কিন্তু আজ মনে হচ্ছে আমরা ধীরে ধীরে সেই জায়গা থেকে দূরে সরে যাচ্ছি। এত অভিজ্ঞ ম্যানেজমেন্ট, খুঁজে বের করুন কোথায় ভুল হচ্ছে।”
বাংলাদেশ দলের কোচিং সেটআপেও পরিবর্তন এসেছে। চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে সরিয়ে আনা হয়েছে নতুন প্রধান কোচ ফিল সিমন্সকে। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দীন, পেস কোচ শন টেইট ও স্পিন কোচ মুশতাক আহমেদ। রুবেলের মতে, দেশের ক্রিকেট ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে নতুন কোচিং স্টাফদেরই বড় ভূমিকা নিতে হবে।
তবে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। সাইফ হাসান দারুণ পারফরম্যান্সে ফিরেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিনি ৪৩ রান করার পাশাপাশি ৬ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। তাঁকে প্রশংসা করে রুবেল লিখেছেন,
“সাইফ, তুই এখন দারুণ ফর্মে আছিস। এই ছন্দটা ধরে রাখিস।”
ওয়ানডেতে ব্যাটিং বিপর্যয় এখন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৯১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১০ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। একই মাঠে পরের ম্যাচে ৩ উইকেটে ৭০ থেকে ৯৩ রানে গুটিয়ে পড়ে মিরাজের দল।
ওয়ানডেতে এটি ছিল বাংলাদেশের ষষ্ঠবার ২০০ বা তার বেশি রানে পরাজয়। এর আগে ২০০০ সালে পাকিস্তানের কাছে ২৩৩ রানে, ২০১১ বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২০৬ রানে, এবং ২০১৭ সালে আবার দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে ২০০ রানে হেরেছিল বাংলাদেশ। ভারতের কাছেও দুইবার ২০০ বা তার বেশি ব্যবধানে হারের রেকর্ড রয়েছে।