কানাইঘাটে গ্রামীণ জনপদের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা : নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান বললেন দ্রুত সংস্কারের ঘোষণা
জয়নাল আজাদ ::- কানাইঘাট উপজেলার গ্রামীন জনপদের রাস্তাঘাটের বেহাল দশা, রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা দেখলে মনে হয় এ যেন দেখার কেউ। উপজেলার প্রত্যেকটি ইউনিয়নের রাস্তাঘাটের মতো কানাইঘাট পৌরসভার রাস্তাগুলোর অবস্থা প্রায় একই রকম। বিশেষ করে উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়ন। লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির উত্তরে সীমান্তে ভারতের মেঘালয় রাজ্য- আর পুর্ব সীমান্তে ভারতের আসাম রাজ্য। দক্ষিনে সুরমা নদী ও উত্তরে লোভা নদী এরই মধ্যে উক্ত ইউনিয়নের জনসাধারনের বসবাস। এ যেন দ্বীপ অঞ্চল বলে মনে হয় অনেকেই। যে এলাকায় আজ পর্যন্ত যাতায়াতের জন্য দুই একটি পাকা রাস্তাঘাট পরে অধিকাংশ রয়েছে মাটির রাস্তা। অতচ দেশের বৃহৎ একটি কোয়ারী রয়েছে লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউপির ভুখন্ড জুড়ে। এছাড়া পেট্রোবাংলা, বালু মহাল, সামাজিক বনায়ন, ফিসারিজ প্রকল্প ও ফরমূলের বাগান সহ রয়েছে অনেক কিছু উক্ত ইউপিতে।
সরেজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কানাইঘাট-শাহবাগ, কানাইঘাট-চতুল, কানাইঘাট-সুরইঘাট, কানাইঘাট-গাছবাড়ী, কানাইঘাট-ভবাণীগঞ্জ, সুরইঘাট-চতুল, সুরইঘাট-মুলাগুল রাস্তা, কানাইঘাট-মনসুরিয়া সড়ক সম্প্রতি সংস্কার হলেও বর্তমানে আবার উক্ত রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে পুরো উপজেলার গ্রামীন ও ইউনিয়ন সড়কগুলোতে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন সড়কের প্রতিটি খানাখন্দে ভরপুর হয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। আর শতাধিক গ্রামীন রাস্তার বেহাল অবস্থার ফলে জনদুর্ভোগের শেষ নেই। খানাখন্দে ভরা এসব রাস্তা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিনিয়ত উপজেলা সদরে যাতায়াত করছেন পথচারী ও যানবাহন চালকরা। দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে রাস্তার অধিকাংশ জায়গায় পিচ, পাথর ও খোয়া উঠে মাটি বের হয়ে রাস্তায় তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। এইসব রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে গিয়ে বেশিরভাগ বিকল হয়ে পড়ছে। শুকè মৌসুমে ধূলো-বালির আস্তরণে ঢাকা পড়ছে রাস্তার আশেপাশের বাড়িগুলো। আর বর্ষায় কাদা মাটি আর পানিতে গর্ত ভরে হয়ে উঠে কৃষি জমি। ফলে আধাঘন্টার পথ পাড়ি দিতে হচ্ছে দুই/তিন ঘন্টায়। সময় অপচয় হওয়ার পাশাপাশি বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীদের। অথচ দেখে বোঝার উপায় নেই, একসময় পিচের আস্তরণে ঢাকা ছিল রাস্তা গুলো।
বিশেষ করে গাজী বুরহান উদ্দিন রাস্তা দীর্ঘদিন থেকে সংস্কার না হওয়ায় জেলা সদরের সাথে এই রাস্তা দিয়ে কানাইঘাটের মানুষের যোগাযোগ বিচ্চিন্ন রয়েছে। গাজী বুরহান উদ্দিন রাস্তা দ্রুত সংস্কার হলেব জনসাধারণের দুর্ভোগ অনেকটা কমে আসবে বলে জানান স্থানীয় সচেতন মহল। এলাকাবাসী জানান, কানাইঘাট উপজেলার গ্রামীন রাস্তাগুলো বছরের পর বছর ভাঙ্গাচোড়া থাকলেও সেটি সংস্কারের কোন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় না। গত বন্যা ও চলতি বর্ষায় রাস্তার পিচ উঠে গিয়ে চলাচলের অনুপযোগি হয়ে পড়লেও তা সংস্কারে কর্তৃপক্ষ একটুও নজর দেয়নি। এতে করে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন এলাকার মানুষ তথা স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, এসব সড়কের নির্মাণকাজের গুনগত মান নিম্নমানের হওয়ায় মাত্র এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই তা চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে জনদূর্ভোগও ক্রমেই বাড়তে থাকে। এ থেকে উত্তরণের নেই কোন উপায়।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে, সিলেট-০৫ (কানাইঘাট-জকিগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মাওলানা হুসাম উদ্দিন দেশের বাহিরে থাকায় উনার বক্তব্যে পাওয়া যায় নি। তবে কয়েক দিন আগে কানাইঘাটে বিভিন্ন এলাকা ঘুরে উনি বলেছেন গাজী বুরহান উদ্দিন রাস্তার সংস্কারের জন্য ৪কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। তবে এখনও গাজী বুরহান উদ্দিন রাস্তায় কোন ও জায়গায় সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে মর্মে খবর পাওয়া যায় নি। এদিকে কানাইঘাট উপজেনা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মস্তাক আহমদ পলাশ বলেন আমি এখনও দ্বায়িত্ব নেই নি। তবে কানাইঘাট উপজেলার রাস্তাগুলো সংস্কার কাজ করা খুবই জরুরী। মাননীয় এমপি মহোদয়ের সাথে আলাপ করে যে সব রাস্তা ভাংচুরা রয়েছে সে সব রাস্তা দ্রুত সংস্কারের ব্যবস্থা করব।