১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

কানাইঘাটে চোরাকারবারিরা হাত বদলে এখন আরো বেপরোয়া- সরগরম ‘বুঙা’ব্যবসা

admin
প্রকাশিত ২৫ ডিসেম্বর, বুধবার, ২০২৪ ২১:৪২:৫৩
কানাইঘাটে চোরাকারবারিরা হাত বদলে এখন আরো বেপরোয়া- সরগরম ‘বুঙা’ব্যবসা

Manual5 Ad Code

কানাইঘাটে চোরাকারবারিরা হাত বদলে এখন আরো বেপরোয়া- সরগরম ‘বুঙা’ব্যবসা

 

Manual8 Ad Code

কানাইঘাট সংবাদদাতা :: পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত থেকে চোরাই পথে নিয়ে আসা পণ্যকে বলা হয় ‘বুঙার মাল’। আর চোরাই চিনিকে বলা হয় বুঙার চিনি। সিলেটের কানাইঘাটে চোরাচালান নিত্যদিনের ঘটনা। গড়ে উঠেছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার চোরাচালান হচ্ছে ভারত সীমান্ত অংশের কয়েকটি স্থান দিয়ে। ৫ই আগস্টের প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকে হাত বদল করে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে চোরাকারবারিরা।

Manual7 Ad Code

 

এখন তাদের লাগাম টেনে ধরতে বিজিবি’র পক্ষ থেকে প্রতিদিনিই সাঁড়াশি অভিযান চালানো হচ্ছে। কানাইঘাট দুর্গম এলাকা হওয়ার কারণে এই এলাকা চোরাচালানের নিরাপদ রুটে পরিণত হয়েছে। বুঙগারী রাত-দিন থাকে আন্দুরমুখ ও সুরাইঘাট। চারদিকে নদী, মাঝখানে গ্রামের অবস্থান। আছে ছোট একটি বাজার। এই আন্দুরমুখের নাম এখন সবাই জানে। কেন এত পরিচিত বলা হচ্ছে চোরাচালানি মালামাল নামে এই স্পট দিয়ে। নদীর তীর দিয়ে প্রতিদিন শত মোটরসাইকেল দিয়ে চোরাকারবারিরা মালামাল নিয়ে আসে দ্বীপ গ্রাম আন্দুরমুখে কয়েকটি গডাউনে মজুত করে। ফলে গ্রাম কিংবা বাজার জেগে থাকে চব্বিশ ঘণ্টাই। চোরাকারবারি চক্র অবৈধভাবে শত শত বস্তা ভারতীয় চিনি, পাতার বিড়ি, চা-পাতা, কসমেটিকস সামগ্রী, কাপড়, মোবাইল সেট, স্পোর্টস সামগ্রী, শুঁটকি ও বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য নিয়ে আসছে সীমান্ত দিয়ে। স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি ও জনপ্রতিনিধিরা এই কারবারে জড়িত রয়েছে। জনবিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ার কারণে প্রশাসনের তরফ থেকে মাঝে-মধ্যে অভিযান চালালেও নিয়ন্ত্রকরা বহালই থাকেন। এসব অবৈধ পণ্য আশপাশের উপজেলাসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থানে পৌঁছে দিতে নতুন কৌশল অবলম্বন করে চিনি ভর্তি গাড়িতে উপরে খড়, ধানের বস্তা, বালু,পাথর দিয়ে প্রতিদিন শত শত বস্তা চিনি দেশের বিভিন্ন এলাকায় কাভার্ড ভ্যান, ট্রাক, পিকআপ, ট্রাক্টর-ট্রলি দিয়ে পাচার করা হয়।

 

সীমান্তবর্তী কানাইঘাট-সুরইঘাট সড়ক দিয়ে দিনদুপুরে প্রকাশ্যে টাটা পিকআপ, সিএনজি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত মিশুক রিকশা দিয়ে। এক্ষেত্রে প্রশাসনের নীরব ভূমিকায় জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। উপজেলা পরিষদ ও থানার সামনে দিয়ে প্রকাশ্যে চোরাচালান পণ্য বহন করা হলেও তা দেখেও না দেখার ভান করা হচ্ছে। মাঝে মধ্যে কানাইঘাট থানার পুলিশ ও বিজিবি সহ ভারতীয় মালামাল আটক করলে তা একেবারে সীমিত বলে সচেতন মহল জানিয়েছেন। এদিকে বিজিবি ও প্রশাসনের হাতে আটকের পর চিনির চালান আদালতে নিলাম দিতে হয়। যে ভারতীয় পণ্য নিলাম হয়ে থাকে। এসব নিলামের চালানের যেন গুরুত্ব আলাদা। চোরাচালানের বড় সিন্ডিকেট চক্র অংশ নেন নিলামে। এতে করে অধিক মূল্য দিয়ে কিনে নেয়া হয়। নিলামে চিনির চালানে কোটি টাকা বিনিয়োগের পিছনে রহস্য লুকিয়ে রয়েছে।

 

Manual1 Ad Code

জানা য়ায়- চিনির চেয়ে চোরাকারবারিদের কাছে নিলামের রশিদের কাগজ বেশি গুরুত্ব হয়ে থাকে। অনুসন্ধানে জানা যায়- চিনির চালান নিতে আদালতে নিলামে যে কয়দিন সময় বেঁধে দেয়া হয়ে থাকে। নিলামের সেই কাগজ নিয়ে সেই কয়েকদিন দফায় দফায় চোরাই চিনির চালান পৌঁছে দেয়া হয়ে থাকে। আদালতের নিলামের কাগজ দেখিয়ে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে চিনি পাচার করা হয়। এদিকে কানাইঘাট-সুরইঘাট, সড়কের বাজার থেকে চারখাইর রাস্তা হয়ে, হরিপুর থেকে গাজী বোরহান উদ্দীন সড়ক দিয়ে ভারতীয় চিনি পরিবহন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িত পিকআপ, মিশুক রিকশা, সিএনজি গাড়ির কয়েকজন চালক নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমে জানান, কানাইঘাট থানা পুলিশকে গাড়িপ্রতি নির্ধারিত মাসো-হারা দিয়ে প্রতিদিন চিনির ব্যবসা করে আসছেন। কানাইঘাটের অনেক চোরাকারবারি নিরাপদ রুট হিসেবে ভারতীয় চিনিসহ অন্যান্য পণ্যসামগ্রী ও মাদকদ্রব্য জৈন্তাপুর উপজেলার হরিপুর বাজার থেকে গাছবাড়ী-হরিপুর সড়ক দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করে থাকে। জনবিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ার কারণে নিয়ন্ত্রকরা বহালই থাকেন।

 

Manual1 Ad Code

এসব বিষয়ে কানাইঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) সরকারি সেলফোনে যোগাযোগ করলে ওসি ফোন না ধরায় বক্তব্য মিলেনি।