কানাইঘাটে সেওতচুরা জলমহাল বিতর্কিত সমিতিকে ইজারা না দেয়ার আহবান মৎস্যজীবিদের

প্রকাশিত: ১০:০২ অপরাহ্ণ, মার্চ ৫, ২০২৫

কানাইঘাটে সেওতচুরা জলমহাল বিতর্কিত সমিতিকে   ইজারা না দেয়ার আহবান মৎস্যজীবিদের

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ঝিঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের বড় হাওর এলাকায় অবস্থিত সেওতচুরা জলমহাল নীতিমালা পরিপন্থি ইজারা প্রদান বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন জলমহালের নিকটবর্তী এলাকার লোকজন ও প্রকৃত মৎস্যজীবিরা। মৎস্যজীবিদের অভিযোগ ২০২২ থেকে ২০২৫ পর্যন্ত সেওতচুরা জলমহালটি বিতর্কিত ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতিকে স্থানীয় প্রশাসন ইজারা প্রদান করেন।

 

 

 

 

 

 

কিন্তু উক্ত সমিতির সদস্যরা ইজারার শর্ত লঙ্গন করে জৈন্তাপুর উপজেলার কতিপয় প্রভাবশালী লোকদের সাবলীজ প্রদান করলে তারা প্রতি বছর ইজারার শর্ত অমান্য করে জলমহালটি শুকিয়ে মাছ ধরে আসছে। সম্প্রতি জলমহালটি জৈন্তাপুর উপজেলার বালিপাড়া গ্রামে জনৈক জালাল উদ্দিন গংদের ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমিতির সদস্যরা সাবলীজ প্রদান করলে বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে এলাকার সচেতন মহল অবহিত করে।

 

 

 

 

কিন্তু প্রশাসনের নির্দেশ অমান্য করে সাবলীজ দাতা জালাল উদ্দিন গংরা জলমহালটি শুকিয়ে মাছ শিকার করে। প্রকৃত মৎস্যজীবিরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, ইজারার শর্ত অমান্য করায় কানাইঘাটের প্রাক্তন ইউএনও সুমন্ত ব্যানার্জি ঝিঙ্গারখাল সমিতির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেন। এছাড়া এলাকার কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি মূলত ঝিঙ্গারখাল সমিতিকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে জলমহালটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সাবলীজ প্রদান করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এতে করে প্রকৃত মৎস্যজীবিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

 

 

 

 

 

সম্প্রতি ১৪৩২-১৪৩৪ বাংলা সনের জন্য উপজেলা প্রশাসন সেওতচুরা জলমহাল সহ অন্যান্য জলমহালের ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেন। এতে জলমহালটি ইজারা নেয়ার জন্য ইজারার শর্ত লঙ্গনকারী বিতর্কিত ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি, কালাগুল মৎস্যজীবি সমিতি ও জলমহারের নিকটবর্তী রহমানিয়া মৎস্যজীবি সমবায় সমিতি ও একবার ইজারা নেয়া শাহজালাল মৎস্যজীবি সমিতির দরপত্র জমা দেন। প্রাথমিক যাচাই বাছাইয়ে হাওর উন্নয়নের রূপরেখার হার্ডকপি সংযুক্ত না করার অভিযোগ তুলে শাহজালাল মৎস্যজীবি সমিতি এবং কাগজপত্র ভুল থাকায় রহমানিয়া মৎস্যজীবি সমিতিকে অদৃশ্য কারনে যাচাই বাছাই বাদ দেয়ায় প্রকৃত মৎস্যজীবিদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। শাহজালাল মৎস্যজীবি সমিতির সদস্যরা জানান, ইজারার শর্ত মোতাবেক তারা দরপত্র জমা দিয়েছেন, যে অভিযোগে যাচাই-বাছাইয়ে তাদেরকে বাদ দেয়া হয়েছে তা একেবারে অগ্রহণযোগ্য।

 

 

 

 

তারা তাৎক্ষণিক গত ১১ ফেব্রæয়ারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে প্রতিকার চেয়ে দরখাস্ত করেছেন। মৎস্যজীবিরা বলেন, ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি সমিতি জলমহালের ইজারার শর্ত অমান্য করার কাগজপত্র প্রশাসনের কাছে রয়েছে, তারা সব-সময় জলমহালটি সাবলীজ দেয়। অপরদিকে কালাগুল মৎস্যজীবি সমিতির সভাপতি ইসমাঈল আলী সমবায় আইন লঙ্গন করে ৫ বারের মতো সমিতির সভাপতি পদে রয়েছেন এবং সমিতির একজন সদস্য প্রবাসে রয়েছেন এবং তিনজন চাকুরীজীবি। পূর্বে তারা সেওতচুরা জলমহাল ইজারা নিয়ে জৈন্তাপুরের লোকজনদের সাবলীজ দিয়েছেন।

 

 

 

 

এমতাবস্থায় কানাইঘাটের স্বার্থ পরিপন্থি কাজে লিপ্ত ঝিঙ্গারখাল মৎস্যজীবি ও কালাগুল মৎস্যজীবি সমিতিকে সেওতচুরা জলমহালের ইজারা প্রদান না করে পুণরায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জলমহালটির ইজারা প্রদানের জন্য সিলেট জেলা প্রশাসক স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহŸান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানিয়া আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, বিধি অনুযায়ী সেওতচুরা জলমহালটি ইজারা প্রক্রীয়াধীন অবস্থায় রয়েছে। কোন সমিতি ইজারার শর্ত অমান্য করলে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনে ইজারা বাতিল করা হবে।

সর্বশেষ নিউজ