কানাইঘাটে ৯ মাসের শিশুর সামনে মাকে গণধর্ষণ: আটক ৫

প্রকাশিত: ৪:৫৯ অপরাহ্ণ, মে ৩০, ২০২৩

কানাইঘাটে ৯ মাসের শিশুর সামনে মাকে গণধর্ষণ: আটক ৫

কানাইঘাটে ৯ মাসের শিশুর সামনে মাকে গণধর্ষণ: আটক ৫

কানাইঘাট প্রতিনিধিঃ- সিলেটের কানাইঘাটে গত রবিবার রাত ১১টার দিকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে অবুঝ শিশু সন্তানের সামনে এক তরুনীকে গণধর্ষনের ঘটনায় থানা পুলিশ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল সোমবার দিনভর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গণধর্ষনের সাথে জড়িত সহ ৫ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলো উপজেলার নন্দিরাই গ্রামের আলাউদ্দিনের পুত্র দুদু মিয়া (৩৬), বীরদল ভাড়ারীফৌদ গ্রামের মৃত মঈন উদ্দিনের পুত্র হেলাল আহমদ (৩৮), বড়দেশ সরদারী পাড়া গ্রামের বিলাল আহমদের পুত্র ফরহাদ (৩৫), বীরদল আগফৌদ গ্রামের খলিলুর রহমানের পুত্র আব্দুল করিম ও বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের হবিব আলীর পুত্র জুবের আহমদ (২৪)। এর মধ্যে গণধর্ষনের সাথে সরাসরি জড়িত রয়েছে হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ।

গ্রেফতারকৃত অন্য আসামীরা ধর্ষনে সহায়তা ও ধর্ষিতাকে ফুসলিয়ে অপহনের সাথে জড়িত বলে পুলিশ জানিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায় ভিকটিমের বাড়ী কানাইঘাট উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পশ্চিম ইউনিয়নের সোনাতনপুঞ্জি বিলেরপাড় গ্রামে। তার বিয়ে হয় পার্শ্ববর্তী বিয়ানীবাজার উপজেলা বড়দিঘিরপাড় গ্রামের জনৈক মিছবাহ উদ্দিনের সাথে। অনুমানিক ২০ দিন পূর্বে গ্রেফতারকৃত আসামী দুদু মিয়ার সাথে কানাইঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভিকটিমের পরিচয় হয়। সেই সুবাদে দুদু মিয়ার সাথে তরুনীর প্রায়ই ফোনে কথাবার্তা হতো।

ভিকটিমের ৯ মাসের শিশু কন্যা অসুস্থ হলে দুদু মিয়া পার্শ্ববর্তী জকিগঞ্জ উপজেলার ফুটিজুরি গ্রামের এক কবিরাজের কাছে নিয়া যেতে বলে। ভিকটিমের শিশুকন্যার চিকিৎসার নাম করে গত রবিবার বিকাল ৩টার দিকে দুদু মিয়া ধর্ষিতা তরুনীকে তার বাড়ী থেকে নিয়ে যায়। কিন্তু কবিরাজের কাছে না নিয়ে কৌশলে ফুসলিয়ে দুদু মিয়া কানাইঘাটের বীরদল বাজার এলাকায় তরুনীকে নিয়ে ঘুরতে থাকে।

রাত সাড়ে ১০ টার দিকে বীরদল বাজারে থাকা লোকজনের সন্দেহ হয়। এতে দুদু মিয়ার ফোনে তার সহযোগী আব্দুল করিম বীরদল বাজারে চলে আসে এবং তারা তরুনীকে কৌশলে মোটর সাইকেল যোগে বীরদল খালোমুরা বাজারে নিয়ে যায়। এতে স্থানীয় কিছু লোকজনের সন্দেহ হলে তাদের আটক করেন। পরে রাত ১১টার দিকে স্থানীয় লোকজন কানাইঘাট বাজারে নিরাপদে নিয়ে যাওয়ার জন্য জুবের আহমদের রিক্সায় তুলে দেওয়া হয়। এতে তরুনীর পিছু নেয় দুদু মিয়া ও আব্দুল করিম।

একপর্যায় পুরানফৌদ কবরস্থানের সামনে তরুনীর রিক্সা আসা মাত্রই হেলাল আহমদ ও ফরহাদ আহমদ রিক্সার গথিরোধ করে এবং বীরদল ছোটফৌদ গ্রামের পিপি হাবিব আলীর নির্জন পুকুর ঘাটে তরুনীকে তুলে নিয়ে যায়। সেখানে তার শিশুকন্যার সামনে হেলাল ও ফরহাদ তরুনীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে পালাক্রমে ধর্ষন করে। এতে ভিকটিমের প্রচুর রক্তপাত হয়।

গণধর্ষনের সাথে জড়িতরা পালিয়ে গেলে ধর্ষিতার আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের চিহ্নিত করে স্থানীয় এলাকাবাসীর সহায়তায় গতকাল সোমবার দিনভর অভিযান চালিয়ে গণধর্ষনের সাথে জড়িত সহ ৫ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বলে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ গোলাম দস্তগীর আহমেদ জানিয়েছেন।

বর্তমানে গণধর্ষিতাকে পুলিশ হেফাজতে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে পাঠানো হয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ