১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

কিজিলেলমার নতুন মাইলফলক: দৃষ্টিসীমার বাইরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে ইতিহাস তুরস্কের মানবহীন যুদ্ধবিমানের

admin
প্রকাশিত ০১ ডিসেম্বর, সোমবার, ২০২৫ ১৬:২০:০৯
কিজিলেলমার নতুন মাইলফলক: দৃষ্টিসীমার বাইরে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হেনে ইতিহাস তুরস্কের মানবহীন যুদ্ধবিমানের

Manual3 Ad Code

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

তুরস্কের প্রথম মানবহীন যুদ্ধবিমান বায়রাকতার কিজিলেলমা আরও এক নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। চলন্ত লক্ষ্যবস্তুকে দৃষ্টিসীমার বাইরে থেকে (বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ—বিভিআর) স্থানীয়ভাবে নির্মিত আকাশ–থেকে–আকাশে নিক্ষেপযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আঘাত করে নতুন মাইলফলক গড়েছে এই অত্যাধুনিক উড়োজাহাজ। গতকাল রোববার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বায়কার এ তথ্য জানিয়েছে বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি সাবাহ রিপোর্ট করেছে।

Manual5 Ad Code

কোম্পানিটি তুর্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এন–সোশ্যালে জানায়, “বিশ্বে প্রথমবারের মতো কোনো মানববিহীন যুদ্ধবিমান বিভিআর শ্রেণির এয়ার–টু–এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানল।” বায়কারের বিবরণ অনুযায়ী, কিজিলেলমা ‘গোকদোয়ান’ নামে স্থানীয় আকাশ–থেকে–আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে উচ্চগতির জেট–লক্ষ্যবস্তুকে সফলভাবে ধ্বংস করে। লক্ষ্য শনাক্ত ও ট্র্যাকিংয়ে ব্যবহৃত হয় আসেলসান–নির্মিত মুরাদ এইএসএ রাডার।

Manual1 Ad Code

এ পরীক্ষা পরিচালিত হয় কৃষ্ণসাগর সংলগ্ন সিনোপ প্রদেশের আকাশে। এতে মেরজিফন এয়ার বেসের পাঁচটি এফ–১৬ যুদ্ধবিমান কিজিলেলমার সঙ্গে যৌথ বিন্যাসে উড্ডয়ন করে। মানবচালিত ও মানববিহীন প্ল্যাটফর্মের এই সমন্বিত মিশনকে ভবিষ্যৎ আকাশযুদ্ধের নতুন ধারণা হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। মিশনের আকাশচিত্র ধারণে অংশ নেয় বায়রাকতার আকিনচি ইউএভি।

তুরস্কের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো যুদ্ধবিমান নিজস্ব রাডার ব্যবস্থাপনায় দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে আকাশে সরাসরি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানল—এ অর্জনে কিজিলেলমা বিশ্বের প্রথম ও একমাত্র আনুষ্ঠানিকভাবে আকাশযুদ্ধ–সক্ষম মানবহীন প্ল্যাটফর্মের স্বীকৃতি পাচ্ছে। এটি কিজিলেলমার চলমান ধারাবাহিক পরীক্ষার অংশ। এর আগে একটি এফ–১৬–কে লক্ষ্যবস্তু ধরে পরীক্ষা চালানো হয়েছিল।

Manual7 Ad Code

কিজিলেলমার ডিজাইন, উন্নত সেন্সর প্রযুক্তি, কম রাডার সিগনেচার ও মুরাদ এইএসএ রাডার, তয়গুন টার্গেটিং সিস্টেমসহ নানা আধুনিক সরঞ্জাম তুরস্কের মানবহীন যুদ্ধবিমান প্রযুক্তিকে বৈশ্বিকতায় নতুন মাত্রা দিয়েছে। আগে পরিচালিত পরীক্ষায় কিজিলেলমা তোলুন এবং তেবের–৮২ গোলাবারুদ ব্যবহার করে সফল হামলা চালায়।

বায়কারের চেয়ারম্যান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা সেলচুক বায়রাকতার ভিডিও বার্তায় বলেন, “আজ আমরা উড্ডয়ন–ইতিহাসের নতুন যুগের দ্বার খুললাম।” তিনি যোগ করেন, “বিশ্বে প্রথমবারের মতো কোনো মানবহীন যুদ্ধবিমান রাডার–নির্দেশিত এয়ার–টু–এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে নিখুঁতভাবে আঘাত হানল। আল্লাহর রহমতে এই প্রযুক্তিতে তুরস্ক বিশ্বের প্রথম দেশ হলো।”

বায়কারের সিইও হালুক বায়রাকতার একে “বাঁক–পরিবর্তনকারী মুহূর্ত” বলে অভিহিত করেন। তাঁর ভাষায়, “নিজস্বভাবে তৈরি উড়োজাহাজ, রাডার এবং ক্ষেপণাস্ত্র—এই পুরো আকাশযুদ্ধ–শৃঙ্খলা আজ আমরা সম্পূর্ণ দেশীয় সক্ষমতায় সম্পন্ন করেছি।”

Manual3 Ad Code

তুরস্কের শিল্প ও প্রযুক্তিমন্ত্রী মেহমেত ফাতিহ কাচির বলেন, “এটি বৈশ্বিক প্রথম সাফল্য। প্রমাণ হলো—জাতীয় প্রযুক্তি এখন এমন অবস্থানে পৌঁছেছে, যেখানে আকাশ–সুপিরিয়রিটির নিয়ম নতুন করে লেখার সামর্থ্য তুরস্ক অর্জন করেছে।”