ভালো বেতনের চাকরির প্রলোভনে গিয়ে প্রতারণার শিকার
গার্মেন্টস ও নির্মাণ খাতে ভালো বেতনের প্রলোভনে কিরগিজস্তানে গিয়ে কাজ না পাওয়া ও প্রতারণার শিকার হওয়া ১৮০ জন বাংলাদেশি নাগরিক দেশে ফিরেছেন। আজ বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোররাত সাড়ে ৩টায় তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান।
ফেরত প্রক্রিয়া ও সহায়তা
-
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়ে ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম বিদেশ থেকে ফেরত আসা মানুষদের অর্থ ও জরুরি সহায়তা প্রদান করেছে।
-
ব্র্যাকের সহযোগী পরিচালক শরিফুল হাসান জানান, বিদেশে বেশি বেতনের চাকরির লোভ দেখিয়ে বাংলাদেশিরা কিরগিজস্তানে নেওয়া হয়েছিল। সেখানে অনেকে কাজ পাননি, বেতন পাননি, নথিপত্রহীন হয়ে পড়েন, এবং অনেকেই নির্যাতনের শিকার হন।
ফেরত আসা প্রবাসীদের কষ্টের গল্প
-
লালমনিরহাটের মো. শহীদুল ইসলাম (৪৫): ২০২৪ সালের জুনে বিশকেকে পৌঁছে ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে যায়। বেতন ছাড়া কাজ করেন সাত মাস, পরে কিরগিজ কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা দেন। তিন মাস জেল খেটে দেশে ফেরেন।
-
শরীয়তপুরের প্রিন্স মিয়া (২১): ইউরোপে পাঠানোর কথা বলে কিরগিজস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে দালালকে প্রেরণ করেছিলেন। ৪৪ দিন জেলে থাকার পর দেশে ফিরে।
-
কুষ্টিয়ার মো. মিলন আলী (৩৮): ওয়েল্ডিংয়ের কাজে দুর্ঘটনার পর সহায়তা পাননি। চার মাস বেতন না পাওয়ায় নিজেই কিরগিজ কর্তৃপক্ষের কাছে ধরা দেন। তিন মাসের বেশি সময় কারাগারে ছিলেন।
ব্র্যাকের ভূমিকা
-
গত আট বছর ধরে ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার বিদেশ ফেরতদের জরুরি সহায়তা প্রদান করছে।
-
এ সময় ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে বিভিন্ন ধরনের সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
-
শুধু ২০২৪ সালে ৪০ জন প্রবাসীকে বিশ্বের নানা দেশ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
-
মানব পাচারবিরোধী লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের টিআইপি হিরো-২০২৪ পুরস্কারপ্রাপ্ত আল-আমিন নয়ন ও মালয়েশিয়া থেকে ফেরত আসা রায়হান কবিরসহ একটি দল এই কাজে সক্রিয়।
যোগাযোগ
বিদেশে বিপদে পড়া যে কেউ ব্র্যাক মাইগ্রেশন ওয়েলফেয়ার সেন্টার-এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। আন্তর্জাতিক ও সরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের সহায়তা ও পুনর্বাসনের কাজ করা হবে।