দ্বীপকন্যা কুতুবদিয়ায় পর্যটনের নতুন দুয়ার খুলে দিয়েছে লাইটহাউস সি-বিচ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় পর্যটকদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করা হয় এই মিনি পর্যটন স্পটটি।
দক্ষিণ ধুরুং ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে কুতুবদিয়া বাতিঘরের পাশেই লাইটহাউস সি-বিচটির অবস্থান। পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াতে এখানে বসানো হয়েছে টিকটক চেয়ার। এই সৈকত থেকে দূরে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা জাহাজ দেখা যায়, যা দর্শনার্থীদের কাছে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সৈকতের অনুভূতি জাগায়। আবার বিস্তীর্ণ বালুচর দেখে অনেকের কাছেই এটি কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের মতো মনে হয়।
প্রায় ২৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সৈকত পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হলে সেন্টমার্টিন ও সোনাদিয়া দ্বীপের ওপর পর্যটনের চাপ কমবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
শুক্রবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ ধুরুং বাতিঘর পয়েন্টে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্যথোয়াইপ্রু মারমা লাইটহাউস সি-বিচের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এ সময় তিনি বলেন,
“আজ থেকে অপার সম্ভাবনাময় পর্যটনের যাত্রা শুরু হলো। স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা পেলে এই লাইটহাউস সি-বিচ দ্বীপের উন্নয়নে বড় ভূমিকা রাখবে এবং স্থানীয় অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”
উদ্বোধন ঘিরে পুরো এলাকা উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হাজারো নারী, পুরুষ ও শিশু লাইটহাউস সি-বিচে ভিড় করেন। রাত পর্যন্ত চলে আবরার শাহীনসহ একঝাঁক শিল্পীর মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা থেকে আসা পর্যটক আবদুল হামিদ বলেন,
“সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জেনে ১০ জন মিলে এখানে এসেছি। খুব ভালো লাগছে। কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন বা কুয়াকাটায় যে সৌন্দর্য দেখি, সেটি কুতুবদিয়াতেও পাওয়া যাবে বলে মনে হচ্ছে।”
দক্ষিণ ধুরুং ইউপি চেয়ারম্যান আলাউদ্দিন আল আজাদ বলেন,
“সম্ভাবনাময় দ্বীপ কুতুবদিয়ায় প্রকৃতি নিজেই পর্যটনের উপযোগী পরিবেশ দিয়েছে। আমরা একটি সূচনা করেছি। প্রশাসন ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করলে এখানে পর্যটনের ব্যাপক প্রসার ঘটবে এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। একদিন ভ্রমণপিপাসুরা সেন্টমার্টিনের বদলে কুতুবদিয়ায় আসবে—এই প্রত্যাশা আমাদের।”
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন কুতুবদিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহবুবুল হক, উপজেলা প্রকৌশলী আবুসউদ্দিন, ধুরুং আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোর্শেদুল আলম, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী মো. ফরহাদ মিয়াসহ অন্যান্যরা।