
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা:
খাগড়াছড়িতে এক মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠলেও ডাক্তারি পরীক্ষার প্রতিবেদনে ধর্ষণের কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি আধুনিক সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ জয়া চাকমা।
তিনি জানান,
“আমরা মেডিকেলে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছি, কিন্তু আসলে ধর্ষণের কোনো আলামত পাইনি। আলামত পরীক্ষার ১০টি সূচকের সব কটি স্বাভাবিক এসেছে।”
আলামত পরীক্ষার দায়িত্বে ছিলেন তিন চিকিৎসক—জয়া চাকমা, মোশারফ হোসেন ও নাহিদা আকতার। তাঁদের প্রতিবেদনে সিভিল সার্জনের কাছে জমা দেওয়া ফলাফলে বলা হয়েছে, ধর্ষণের পরীক্ষার ১০টি সূচকের সব কটিই স্বাভাবিক, অর্থাৎ কোনো ধর্ষণের আলামত নেই।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ৯টার দিকে প্রাইভেট পড়ে ফেরার পথে ওই মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে তাকে উদ্ধার করেন স্বজনেরা। পরে রাতেই তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন বুধবার হাসপাতাল ছেড়ে যায় সে।
এ ঘটনায় পুলিশ শয়ন শীল নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।
ঘটনার পর পাহাড়ে তীব্র উত্তেজনা দেখা দেয়। ধর্ষণের অভিযোগের প্রতিবাদে জুম্ম ছাত্র-জনতার ব্যানারে গত শনিবার খাগড়াছড়িতে অবরোধ পালন করা হয়। পরদিন থেকে তিন পার্বত্য জেলায়ও অবরোধের ডাক দেয় সংগঠনটি।
অবরোধ চলাকালে গত রোববার খাগড়াছড়ির গুইমারার রামেসু বাজারে বিক্ষোভ সহিংসতায় রূপ নেয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে অবরোধকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় স্থানীয় একটি পক্ষও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে ছিল বলে জানা গেছে।
সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনজনের মৃত্যু হয়, তাঁরা সবাই পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সদস্য। আহত হন অন্তত ২০ জন, এর মধ্যে সেনাবাহিনীর একজন মেজরও রয়েছেন। সহিংসতার মধ্যে রামেসু বাজার এলাকায় আগুনে পুড়ে যায় অর্ধশতাধিক বসতবাড়ি ও প্রায় ৪০টি দোকান।