গাজার পশ্চিমাঞ্চলে আল-মালিয়া রাউন্ড অ্যাবাউটের কাছে বসবাস করতেন ইংরেজি শিক্ষিকা গাদা রাবাহ এবং তাঁর ভাই হুসাম। কয়েক দিন আগে ইসরায়েলি বিমান হামলায় তাঁদের বাড়ি আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আহত অবস্থায় রাবাহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উদ্ধার সহায়তার আবেদন করেছিলেন।
কিন্তু তিন দিন পর সিভিল ডিফেন্সের উদ্ধারকর্মীরা যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছান, তখন দেখা যায়—বাড়িটিতে আবারও আঘাত হানা হয়েছে। দ্বিতীয়বারের আঘাতে বাড়িটি সম্পূর্ণ ধসে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে রাবাহ বা তাঁর পরিবারের কোনো সদস্যের খোঁজ পাওয়া যায়নি।
সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, “টানা কয়েক ঘণ্টা অনুসন্ধানের পর আমাদের দল ফিরে এসেছে। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি, গাদা রাবাহ বা তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের আমরা খুঁজে পাইনি। বাড়িটি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।”
মিডল ইস্ট মনিটরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই এলাকা আগেও ভয়াবহ হামলার সাক্ষী। যুদ্ধের শুরুতে ছোট্ট শিশু হিন্দ রাজাবও এখানে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছিল।
গাদা রাবাহর ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে লিখেছেন, এটি গাজার হাজারো মানুষের অভিজ্ঞতার প্রতিচ্ছবি—যারা ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে বাড়িঘর হারিয়ে ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন।
রাবাহ কেবল শিক্ষকই ছিলেন না; তিনি শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণা ছিলেন। ইংরেজি শিক্ষা দিয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের আলোয় উজ্জীবিত করেছেন এবং আত্মবিশ্বাসী করেছেন। তাঁর অনেক ছাত্রছাত্রী বিদেশে স্কলারশিপ পেয়েছেন। রাবাহ চাইতেন, শিক্ষার্থীরা বিদেশে শিক্ষা নিয়ে আবার গাজায় ফিরে এসে সম্প্রদায়ের জন্য কাজ করুক এবং ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার হোক।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বলা হচ্ছে, “গাদা রাবাহকে হত্যা করা হতে পারে, কিন্তু তাঁর স্বপ্নকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি। তিনি যে মুক্ত ফিলিস্তিনের স্বপ্ন দেখতেন—যেখানে শিশুরা নির্ভয়ে শিখবে, বড় হবে এবং বিশ্বকে জানাবে নিজেদের অভিজ্ঞতা—সেই স্বপ্ন এখন গাজার মানুষের লড়াইয়ের প্রেরণা।”