চট্টগ্রাম, প্রতিনিধি :
চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানা এলাকায় ফুটপাত থেকে হকার মো. ইসমাইলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় আরও দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জানিয়েছে, ফুটপাতে দোকান চালানো নিয়ে বিরোধের জেরে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে ইসমাইলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের দুই সপ্তাহ পর রোববার (১৪ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
এর আগে শনিবার রাতে নগরের মেরিনার্স রোডের ইয়াকুবনগর লইট্টাঘাটা এলাকা থেকে র্যাব-৭ অভিযান চালিয়ে দুইজনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁদের কোতোয়ালি থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন—চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বিনু বৈদ্যর ছেলে রুবেল বৈদ্য (৩১) এবং পটিয়া উপজেলার দক্ষিণ মালিয়ারার রতন নাথের ছেলে রাজু নাথ (৩৮)।
পুলিশ জানায়, গত ২৭ নভেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে নগরীর লালদীঘি মোড়ে, কোতোয়ালি থানার কাছাকাছি এলাকায় সাইকেল চালিয়ে বাসায় ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে নিহত হন হকার ইসমাইল। প্রথমে ঘটনাটিকে ছিনতাই হিসেবে ধারণা করা হলেও তদন্তে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। পুলিশের সংগ্রহ করা সিসিটিভি ফুটেজে মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবককে হত্যায় সরাসরি অংশ নিতে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় পরদিন নিহতের স্ত্রী নাহিদা আক্তার কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্তে পুলিশ মনির হোসেন ওরফে নয়ন নামের একজনকে প্রথমে গ্রেপ্তার করে।
সংবাদ সম্মেলনে সিএমপির উপকমিশনার মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ফুটপাতের দোকান নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে খুনি দিয়ে মো. ইসমাইলকে হত্যা করা হয়েছে। মোটরসাইকেলে থাকা হত্যায় সরাসরি জড়িত তিনজনকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। খুনে ব্যবহৃত টিপ ছুরি ও মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর ইসমাইলের খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি মনির হোসেনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই বাকি দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার তিনজনই পেশাদার ভাড়াটে খুনি। তাঁদের মধ্যে রাজু নাথের বিরুদ্ধে তিনটি এবং রুবেল বৈদ্যর বিরুদ্ধে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এসব মামলার মধ্যে ডাকাতি, দস্যুতা ও হত্যার অভিযোগ রয়েছে।
সিএমপির এই কর্মকর্তা জানান, ইসমাইলের সঙ্গে ফুটপাতের দোকান নিয়ে যাঁর বিরোধ ছিল, তিনিই মূলত এই হত্যাকাণ্ডের জন্য খুনিদের ভাড়া করেছিলেন। ওই ব্যক্তিসহ আরও দুজনের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে আপাতত তাঁদের নাম প্রকাশ করা হচ্ছে না।