শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খানের বক্তব্যের কিছু অংশ খণ্ডিতভাবে প্রচার করে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করার অভিযোগে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০১ শিক্ষক। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। ফাইন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. ইসমত আরা হক এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাসের বদলে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা দলের নামে যে প্রচার হচ্ছে, তা ইতিহাস বিকৃতির অংশ। চবি শিক্ষকরা মনে করেন, শহীদ বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ এবং নেপথ্যের হত্যাকারী চক্রকে নিরপেক্ষভাবে উন্মোচিত করার জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের প্রয়োজন। তারা জোর দিয়ে বলেছেন, পাকিস্তানি বাহিনী বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করবে—এমন ধারণা ‘রীতিমতো অবান্তর’। উপ-উপাচার্য মূলত হত্যাকাণ্ডের প্রকৃতি ও আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কিছু মহল স্বাধীনতার পক্ষ-বিপক্ষ ট্যাগ ব্যবহার করে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে। যারা প্রকৃত ইতিহাস অনুসন্ধান না করে এ ধরনের কৌশল অবলম্বন করছে, তারা ভারতীয় আধিপত্যবাদের এজেন্ট ও বিতাড়িত আওয়ামী-বাকশালি ফ্যাসিবাদের অনুসারী।
উল্লেখ্য, গত রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে উপাচার্যের দপ্তরে আয়োজিত আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য শামীম উদ্দিন খান বলেন, আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বুদ্ধিজীবী হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে এবং পাকিস্তানি বাহিনী যে কোনোভাবে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছিল, তা বলা সঠিক নয়। এই বক্তব্যের পর শাখা ছাত্রদল বিক্ষোভ মিছিল ও উপ-উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করে।
মঙ্গলবার চবি প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপ-উপাচার্য উপস্থিত থাকলেও শাখা ছাত্রদল বিজয় দিবসের কর্মসূচি বর্জন করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টররিয়াল বডির হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।