ঢাকা: রাজধানীর দক্ষিণখানে চাঁদা না দেওয়ায় যুবলীগ নেতা শাহজাহান ডিলারকে (৪৫) এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা—এমন দাবি করেছে তাঁর পরিবার। হত্যার আগেই নিজের প্রাণনাশের আশঙ্কার কথা স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন শাহজাহান। হুমকি পেয়ে থানায় অভিযোগও করেছিলেন তিনি বলে জানিয়েছে পরিবার ও পুলিশ সূত্র।
গত সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে দক্ষিণখানের নদ্দাপাড়ার তালতলা মোড়ে শাহজাহান ডিলারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি চাপাতি এবং হামলাকারীদের একটি মাথার ক্যাপ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত শাহজাহান আশকোনা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি ছিলেন এবং ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে নিহতের স্ত্রী ঝর্ণা আক্তার বাদী হয়ে ডিএমপির দক্ষিণখান থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচ থেকে ছয়জনকে আসামি করা হয়েছে।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে একটি চক্র শাহজাহানের কাছে নিয়মিত চাঁদা দাবি করে আসছিল। চাঁদা না পেয়ে তাঁর ডিশ ও ইন্টারনেটের ব্যবসা দখলের চেষ্টা চলছিল। এর জের ধরেই তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে পরিবারের অভিযোগ।
নিহতের চাচাতো ভাই সোহেল রানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, “হত্যার দুই দিন আগেও শাহজাহান ভাই ভাবিকে বলেছিলেন—আমি হয়তো বেশি দিন বাঁচব না, তুমি আমার ছেলেমেয়েদের দেখে রেখো।” তিনি জানান, শাহজাহান যুবলীগের বিমানবন্দর থানার সভাপতি প্রার্থী ছিলেন এবং ২০২৪ সালের পর থেকে সন্ত্রাসীরা তাঁর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করছিল। এর মধ্যে তাঁর কিছু ব্যবসাও দখল করে নেওয়া হয়।
আরেক চাচাতো ভাই নাহিদ পারভেজ জানান, ৫ আগস্টের পর একাধিকবার চাঁদার জন্য শাহজাহানকে হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বিষয়টি তিনি থানায় লিখিতভাবে জানিয়েছিলেন এবং তৎকালীন ওসিকেও একাধিকবার অবহিত করা হয়।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের দুই দিন পার হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শরিফুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
হত্যার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওসি বলেন, “নিহতের স্ত্রী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেছেন। পরিবারও চাঁদা দাবির বিষয়টি আমাদের জানিয়েছে। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত বলা সম্ভব নয়।”