১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

চা-বাগান ধ্বংসের মুখে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শ ঙ্কা

admin
প্রকাশিত ০২ আগস্ট, শনিবার, ২০২৫ ২০:৪৩:১২
চা-বাগান ধ্বংসের মুখে অবৈধ বালু-পাথর উত্তোলনে নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শ ঙ্কা

Manual4 Ad Code

সিলেটের পর্যটন কেন্দ্র জাফলংয়ের ঐতিহ্যবাহী চা-বাগান এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।

Manual4 Ad Code

স্থানীয়দের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট দিনের পর দিন নদীর পাড়ে অবৈধভাবে বালু ও পাথর উত্তোলন করছে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে বাগানটি ভাঙনের মুখে পড়েছে। হুমকির মুখে পড়েছে আশপাশের ঘরবাড়ি, মসজিদ-মাদ্রাসা, স্কুল এবং সুপারি বাগানও।

জাফলং চা-বাগানটি পূর্বজাফলং ও মধ্যজাফলং ইউনিয়নের নদীঘেঁষা এলাকায় অবস্থিত। এটি শুধু একটি কৃষিজ সম্পদ নয়, বরং পর্যটন শিল্পের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নদীর তীরে হওয়ায় বাগানটি প্রাকৃতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ হলেও অপরিকল্পিত ও অবৈধ খননের কারণে এখন পুরো এলাকা চরম পরিবেশগত হুমকিতে পড়েছে।

Manual3 Ad Code

অভিযোগের আঙুল প্রভাবশালী চক্রের দিকে এলাকাবাসীর দাবি, স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট দিনে ও রাতের আঁধারে বালু-পাথর উত্তোলন করছে এবং প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রতিদিন লাখ টাকার অবৈধ বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে।

Manual1 Ad Code

স্থানীয়রা নাম প্রকাশ করে জানান, একটি বিশেষ রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে এই চক্রটি প্রশাসনের প্রভাবশালী মহলকে ব্যবহার করে অবাধে পরিবেশ ধ্বংস করছে।

প্রশাসনের রহস্যজনক নীরবতা-স্থানীয় সূত্র মতে, গোয়াইনঘাট উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত অভিযান পরিচালিত হলেও জাফলং চা-বাগানের আশপাশে কার্যত কোনো তৎপরতা নেই। অভিযোগ রয়েছে, থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন এসব কর্মকাণ্ড দেখেও না দেখার ভান করছে।

জনদুর্ভোগ ও আশঙ্কা-চা-বাগান ছাড়াও আশপাশের বসতবাড়ি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ধ্বংসের মুখে। নদীর ভাঙনে ইতোমধ্যে কয়েকটি জায়গায় চা-গাছ ও ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেছে। স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “আমার বাবার আমল থেকে এই বাগানে চা চাষ হচ্ছে। এখন পাথরের গাড়ি আর ড্রেজার মেশিনে পুরো অঞ্চল কাঁপে। এইভাবে চললে দুই-এক বছরের মধ্যে সব শেষ হয়ে যাবে।

Manual8 Ad Code

সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ-এলাকাবাসী জানিয়েছেন, বহুবার অভিযোগ দিয়েও কোনো কার্যকর ব্যবস্থা না পাওয়ায় তারা হতাশ। তাই এবার তারা সরাসরি সরকার ও পরিবেশ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। তাদের মতে, এখনই ব্যবস্থা না নিলে জাফলংয়ের পরিবেশ ও পর্যটন সম্ভাবনা চিরতরে ধ্বংস হয়ে যাবে।

জাফলং শুধু একটি পর্যটন কেন্দ্র নয়, এটি পরিবেশ, কৃষি ও সংস্কৃতির এক অপূর্ব মেলবন্ধন। আর এই সম্পদ রক্ষা করা এখন সময়ের দাবি। এলাকাবাসীর দাবি স্পষ্ট—অবিলম্বে অবৈধ খনন বন্ধ করে জাফলং চা-বাগানকে রক্ষা করতে হবে।