
পিয়ংইয়ং, ২১ ডিসেম্বর:
জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের যে কোনো প্রচেষ্টা কঠোরভাবে প্রতিহত করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ রোববার এক বিবৃতিতে জানায়, জাপানের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা মানবজাতির জন্য ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।
উত্তর কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন ইনস্টিটিউট ফর জাপান স্টাডিজ-এর পরিচালক এক বিবৃতিতে বলেন, জাপানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা শুধু এশিয়া নয়, পুরো বিশ্বের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করবে। তিনি বলেন, ‘জাপানের পারমাণবিক হওয়ার প্রচেষ্টা মানবজাতির জন্য এক মহাবিপর্যয় বয়ে আনবে।’
যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক কর্মকর্তার সাম্প্রতিক মন্তব্যের প্রেক্ষিতেই উত্তর কোরিয়ার এই প্রতিক্রিয়া। জাপানের বার্তা সংস্থা কিয়োদো নিউজের খবরে বলা হয়, ওই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছেন যে, টোকিওর পারমাণবিক অস্ত্র রাখা উচিত।
এই প্রেক্ষাপটে উত্তর কোরিয়া দাবি করেছে, এটি কোনো বিচ্ছিন্ন বা বেপরোয়া মন্তব্য নয়; বরং জাপানের দীর্ঘদিনের পারমাণবিক অস্ত্রায়নের আকাঙ্ক্ষারই বহিঃপ্রকাশ। বিবৃতিতে বলা হয়, তথাকথিত ‘অ-পারমাণবিক নীতি’ পুনর্বিবেচনার আলোচনা করে জাপান কার্যত একটি ‘লাল রেখা’ অতিক্রম করেছে।
কেসিএনএ আরও দাবি করেছে, যুক্তরাষ্ট্র গত অক্টোবরে দক্ষিণ কোরিয়াকে একটি পারমাণবিক সাবমেরিন নির্মাণের অনুমোদন দেওয়ার পর থেকেই জাপানে এ ধরনের বক্তব্য জোরালো হতে শুরু করে। ওই অনুমোদনটি দেওয়া হয় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিয়ংয়ের মধ্যে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ বৈঠকের পর।
উত্তর কোরিয়ার ওই কর্মকর্তা সতর্ক করে বলেন, জাপান যদি পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন করে, তবে এশিয়া ভয়াবহ পারমাণবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। তবে তিনি পিয়ংইয়ংয়ের নিজস্ব পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
উল্লেখ্য, উত্তর কোরিয়া নিজেই একটি ক্রমবর্ধমান পারমাণবিক অস্ত্রভান্ডারের অধিকারী বলে আন্তর্জাতিকভাবে ধারণা করা হয়। আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ও নিরস্ত্রীকরণের আহ্বান সত্ত্বেও দেশটি তার পারমাণবিক সক্ষমতা বজায় রাখা ও সম্প্রসারণের অবস্থানে অনড় রয়েছে। গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘে দেওয়া ভাষণে উত্তর কোরিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী কিম সন গিয়ং বলেন, পারমাণবিক অস্ত্র তাদের রাষ্ট্রীয় আইন, জাতীয় নীতি ও সার্বভৌম অধিকারের অংশ, যা তারা কোনো অবস্থাতেই ত্যাগ করবে না।