জাফলংয়ে মেকানিক রাজুর মাদক কারখানা

প্রকাশিত: ৮:২৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৩, ২০২৫

জাফলংয়ে মেকানিক রাজুর মাদক কারখানা

স্টাফ রির্পোটার: সিলেটের শীর্ষ মাদক সম্রাট আব্দুর রহমান উরফে ইয়া রাজুর বাড়ি গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং মোহাম্মদপুর এলাকায়। রাজু নিজস্ব গাড়ির গ্রেরেজে গড়েছেন মাদকের কারখানা। নিস্ব গাড়ী ও লোক দিয়ে সারাদেশে মাদক দ্রব্য সরবরাহ করে থাকেন বলেন অনুসন্ধানে জানা যায়।

 

এই মাদক ব্যবসায়ীর নাম আব্দুর রহমান উরফে রাজু তিনি একজন নওমুসলিম।

 

 

বসবাস করেন উপজেলার জাফলং এলাকার মোহাম্মদপুর গ্রামে। প্রশাসনের চোখেঁর আড়ালে এইসব মাদক চোরাচালান করে আসছে। রাজুর পেশা একজন গাড়ির মেকানিক।এক সময় মামার বাজার ট্রাক চালক সমিতির বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় ছিলো রাজুর মেকানিকের দোকান। বর্তমানে মোহাম্মদপুর এলাকায় তার মাদকের কারখানা রয়েছে বলে জানা যায় ।

 

 

আসলে কি তিনি শুধু গাড়ির মেরামত করেন?

 

এমন তথ্যের ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে জানা যায়, রাজু দিনের বেলা মেকানিক,রাত হলে মাদক চোরাচালানের কাজ চালা ।এজন গাড়ি মেকানিক রাজুর রয়েছে ৫টি বিভিন্ন ব্রান্ডের  প্রাইভেট কার। ৬টি ট্রাক গাড়ি, ২ টি লেগুনা। তবে গাড়িগুলো নিজের নামে কাগজ করেন নি তিনি ।  যেহেতু গাড়ি গুলো মাদক সরবরাহ কাজের জন্য ব্যবহার করা হয় তাই কোনটি গাড়ি তার নিজের নামে নেই। বিভিন্ন ব্যক্তির নামে গাড়িগুলো কাগজ করে রেখেছেন। তার কাছে রয়েছে বেশ কয়েকটি গাড়ির নাম্বার প্লেটসহ জাল কাগজ।

 

 

 

 

স্থানীয়রা জানান, রাজুর নিস্ব ট্রাকে মাদক সরবরাহ করতে গিয়ে আপন সমন্ধি মোহাম্মদপুর গ্রামের শফিক মিয়ার ছেলে শাহিন ৭শ বোতল ফেনসিডিলসহ সিলেট  র্যাব ( RAB ৯ ) আটক করে ।

 

এ ঘটনায় মাদক ব্যবসায়ী হিসাবে আদালতে প্রমানিত হওয়ায় রাজুর সমন্ধি শাহিন আহমদকে সিলেটের আদালত যাবতজীবন কারাদন্ড প্রদান করেন।

 

কিন্তু চতুর রাজু তার বিশ্বস্থ মাদক সরবরাহকারী সাজাপ্রাপ্ত আসামী শাহিনকে উচ্চ আদালত থেকে আপিলের মাধ্যমে জামিনে বের করে নিয়ে আসেন। রাজু একজন হিন্দু ঘরের ছেলে, প্রেম করে বিয়ে করে মোহাম্মদপুর গ্রামের সাজাপ্রাপ্ত আসামী শাহিরেন আপন ছোট বোনকে ।

পরে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে। নওমুসলিম হিসাবে সকলের কাছে প্রিয় ব্যক্তি হয়ে উঠে। সেই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে এক সময় সে জড়িয়ে পড়ে মাদক ও চোরাচালান ব্যবসায়। দিনে মেকানিকের লেবাস ধরে থাকলেও রাত হলে মাদকের রমরমা ব্যবসা শুরু করে দেয়। সামান্য মেকানিক রাজুর হঠাৎ উত্তান দেখে হতবাক স্থানীয় লোকজন !

 

 

মাদক ব্যবসা করে রাজু অল্প দিনে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যায়। কিছুদিন আগে মোহাম্মদপুর এলাকায় প্রায় কোটি টাকা দিয়ে একটি বাড়ি কিনে রাজু। তার নামে বেনামে রয়েছে ১১/১২ টি বিভিন্ন ব্যান্ডের গাড়ি। রাজুর বসবাস বর্ডার এলাকায় হওয়ায় মাদক তার কাছে সহজলভ্য এ ব্যবসায় তার শশুর বাড়ির লোকদের জড়িত রয়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চত করে।

 

 

কিছুদিন আগে যে রাজু গাড়ির চাকা মেরামত করে জিবিকা চলতো সেই রাজু স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে ভুড়ো আঙুল দেখিয়ে উত্তর সিলেটের প্রত্যেকটা বর্ডার থেকে নিজস্ব সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ভারতীয় ফেন্সিডিল,আফিম, হেরোইন, ইয়াবা,দামি দামি মটর সাইকেল সহ বিভিন্ন ব্যন্ডের মদ চোরাই পথে নিয়ে আসে।

 

 

মেকানিক রাজু এই অবৈধ চোরাচালানে ব্যবহৃত ৬টি টিসি গাড়ি এবং ৫টি প্রাইভেট কার দুইটি লেগুনা ব্যবহার করে থাকে। রাস্তায় বিভিন্ন কৌশলে গাড়ির নাম্বার প্লেট বদল করে,কখনো গাড়ি বদল করে আইনের চোঁখকে ফাঁকি দিয়ে মাদক দ্রব্য নির্বিগ্নে গন্তব্যে নিয়ে যায়। প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিতে গাড়িগুলো এমন ভাবে সে ব্যবহার করে কিছু দূর পর-পর গাড়ির নাম্বার প্লেট পরিববর্তন করে কৌশলে রোড পরিবর্তন করে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক দ্রব্য পৌঁছে দেয় ।

 

মাদক ব্যবসায়ী রাজুর নামে বেনামে রয়েছে জায়গা জমি আর সম্পদ:

 

মোহাম্মদপুর সমাজের মুরব্বি সিরাজ মিয়া বলেন, রাজু খুব গরীব লোক ছিলো এই কিছুদিন হয় সে নতুন মুসলমান হয়েছে আমি লক্ষ করেছি হঠাত তার কাছে এতো গাড়ী কোথা থেকে আসলো-আবার মনে মনে ভাবতে লাগলাম হয়তো মানুষের গাড়ী তার কাছে ঠিক করতে দিয়েছে কিন্তু আরো কিছুদিন যেথে না যেথেই দেখি পাকা দালান বাড়ী কিনেছো এবং কি দামি মোবাইল ও দামি মটর সাইকেল দৌড়াইতেছে। এইসব দেখে আমার সন্দে হয়, সে নিশ্চয় বুংগার কারবার শুরু করেছে। আমার সন্দে সত্যিই প্রমাণিত হয় যখন তার নিস্ব ট্রাকের ভিতর ৭ শত ফেন্সিডিল সহ তার আপন সমন্দি শাহিনকে সিলেট র্যাব (  RAB-৯ ) আটক করে জেলে দেয়।

 

আব্দুর রহমান রাজুর এক প্রতিবেশী বলেন, শুধু মাদক ব্যবসা করে রাজু এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক। তবে সে সব সময় আড়ালে থেকে আপন শালা সমন্ধি বিভিন্ন লোক দিয়ে তার নিজস্ব গাড়ি দিয়ে সারাদেশে মাদক সরবরাহ করে থাকে। তবে সে সব সময় রয়েগেছে আন্ডার গ্রাউন্ডে।

 

এক কথায় রাজু হচ্ছে জাফলং এলাকার মাদক সম্রাট, তবে দিনের বেলা স্থানীয়দের কাছে রাজু সামান্য মেকানিক। এ বিষয়ে রাজুর বক্তব্য জানতে চাইলে তার দোকানে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে কল দিলে ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া সম্বভ হয়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ