জাফলং সীমান্তে চোরাকারবারিদের গডফাদার হেলালের খুটির জোর কোথায় 

প্রকাশিত: ১:৩৪ পূর্বাহ্ণ, মে ১৯, ২০২৩

জাফলং সীমান্তে চোরাকারবারিদের গডফাদার হেলালের খুটির জোর কোথায় 

 

গোয়াইনঘাট প্রতিনিধিঃ- সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট চক্রের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার পাচার বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।

আইনশৃংখলা বাহিনীর অসৎ সদস্যদের প্রত্যক্ষ মদদেই চলছে এসব ব্যবসা। সরজমিন ঘুরে বিভিন্ন সুত্র থেকে জানা যায়, সিলেটের গোয়াইনঘাট সীমান্তের জাফলং ও বিছনাকান্দি এলাকার কয়েকটি স্পট দিয়ে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে ভারত থেকে দেশে প্রবেশ করছে খাসিয়া পান, চিনি, কসমেডিক, শাড়ীকাপড়, গরু-মহিষ, মাদক, অস্ত্রসহ নানান ভারতীয় পণ্য।

সীমান্তে পাহারায় নিয়োজিত বিজিবি’র কিছু অসৎ সদস্যের প্রত্যক্ষ মদদেই পাচার বানিজ্য রমরমা হয়ে উঠছে। স্থানীয় পুলিশ বিজিবি ও ডিবি পুলিশের কিছু অসৎ সদস্যের সমন্বয়ে গড়ে উঠেছে বিশাল সিন্ডিকেট।

এই সিন্ডিকেটের মুল হোতা হিসেবে বার বার যার নাম উঠে এসেছে তার নাম হচ্ছে হেলাল আহমদ। হেলালের সাথে আইনশৃংখলা বাহিনীর কিছু অসৎ সদস্যের রয়েছে নিবিড় সর্ম্পক। আর দেশ থেকে ভারতে পাচার হচ্ছে সিরামিক পণ্য, চানাচুর, চিপস, কুইচ্ছা মাছ, ইলিশ মাছ ও গুড়া দুধ।

সংগ্রাম ক্যাম্পের অধীনে গুচ্চগ্রাম লাল মাটি পয়েন্টে বিজিবির লাইনম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন হাসেম মিয়া,

তার বিরুদ্ধে কেহ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস নেই। এ দিকে ভারত থেকে গরু ও মহিষ পাচারে কামাল মেম্বার, হেলাল আহমদ অবচালিত হয়ে আসছে। প্রতিটি গরু বা মহিষের জন্য ডিবি ও পুলিশের নামে দুই হাজার টাকা করে আদায় করছে এই সিন্ডিকেট চক্রটি। লামাপুঞ্জি, সংগ্রাম পুঞ্জি, নকশিয়াপুঞ্জি ও বাবুর কোনা দিয়ে প্রতি রাতেই দেশে প্রবেশ করছে শত শত গরু মহিষ। তবে গরু মহিষ আনার সাথে সাথেই স্থানীয় গরুর হাটের ইজারাদারকে প্রতিটির ২শ টাকা পরিশোধ করে হাতিয়ে নিচ্ছেন ভুয়া ক্রয়-বিক্রয় রশিদ।

প্রতিটি ট্রাক থেকে ডিবি ও পুলিশের নামে আদায় করছে ৫ হাজার টাকা করে। রাধানগর বাজারে পান ও গরু মহিষ জড়ো করে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়। গোয়াইনঘাট থানার উপর দিয়ে সারিয়াকান্দি সড়ক দিয়ে প্রতি রাতেই শত শত ট্রাক ভর্তি গরু-মহিষ নিয়ে যাচ্ছে দুরদুরান্তের গরু মহিষ ব্যবসায়ীরা।

 

চোরাকারবারি ব্যবসার মুল হোতা হেলাল আহমদ মুঠো ফোনে জানান, আপনারা সাংবাদিক যতো খুশি নিউজ করতে পরেন সমস্যা নাই আমারও সিলেটের অনেক বড় বড় সাংবাদিক বন্ধু রয়েছে তাদের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক রয়েছে সেই সাথে চোরাকারবারি হেলাল আহমদ অনেক সাংবাদিকের নাম উল্লেখ করেছেন। এবং আরও বলেন যে আপনারা বর্তমানে গরুর মাংস ৭০০/৮০০ টাকা করে খাইতেছেন আর আমরা যদি ইন্ডিয়া থেকে গরু না আনি তাহলে আপনারা গরুর মাংস ২০০০ টাকা করে খাইতে হবে এটা মনে রাখবেন। 

এলাকায় কোন কোয়ারী না থাকায় শত শত মানুষ পান চিনি গরু মহিষ ইত্যাদি এনে বিক্রি করে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে। স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারাই সব নিয়ন্ত্রন করছেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করলেই সব পেয়ে যাবেন আপনারা।
গরু মহিষের লাইন নিয়ন্ত্রনকারী হেলাল মেম্বার বলেন, এ বিষয়টি আমাদের কামাল ভাই কে জিজ্ঞেস করলে আরও ভালো করে জানতে পারবেন আপনারা। আমি এত কিছু জানি না। কামাল ভাই আপনার সাথে যোগাযোগ করবে।

গোয়াইনঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল ইসলাম জানান, নিজউ করারমত হলে অবশ্যই করবেন। তবে পাচার বানিজ্যের সাথে পুলিশের কেউ জড়িত নয়।
সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম ও অপস) শেখ মো: সেলিম জানান, সীমান্ত পাহারার দায়িত্বে বাংলাদেশ বর্ডারগার্ড। ভারত থেকে কোন ধরনের পণ্য দেশে প্রবেশ করলে সেটা প্রথমে দেখবে তারা। ডিবি পুলিশের নাম ভাঙ্গিয়ে কেউ কোন ধরনের চাঁদা আদায় করার তথ্য প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

বিজিবি সিলেট সেক্টরের অতিরিক্ত পরিচালক (অপারেশন) মেজর মো: সাইফ জানান, ভারতীয় গরু মহিষ ও পণ্য সামগ্রী পাচারের বিষয়ে ৪৮ বিজিবি’র সিও’র সাথে কথা বলেন । তবে ৪৮ বিজিবি’র সিও মহোদয়ের নাম্বারে একাধিক বার কল দিলে বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ