জাভেদ আখতারের বিতর্কিত মন্তব্যে সরগরম পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি

প্রকাশিত: ২:১০ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২, ২০২৫

জাভেদ আখতারের বিতর্কিত মন্তব্যে সরগরম পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। এরই মধ্যে বলিউডের প্রখ্যাত গীতিকার ও কবি জাভেদ আখতার এক মন্তব্যের মাধ্যমে নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে এসেছেন।

সম্প্রতি তিনি অভিযোগ করেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ইসলামি সংগঠনগুলোর কাছে মাথা নত করছে।” উর্দু অ্যাকাডেমি আয়োজিত সাহিত্য উৎসবে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর পর চাপের মুখে অনুষ্ঠান বাতিল হওয়ায় এ মন্তব্য করেন তিনি।

বিতর্কের পটভূমি

জানাগেছে, জামিয়াত উলেমা-ই-হিন্দ ও ওয়াহ্যাহিন ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠনগুলো তাঁর উপস্থিতি নিয়ে আপত্তি তোলে। কারণ জাভেদ আখতার প্রকাশ্যে নিজেকে নাস্তিক ঘোষণা করেছেন এবং ধর্মীয় আচার নিয়ে সমালোচনামূলক অবস্থান নিয়েছেন। এ কারণে নতুন করে বিক্ষোভের আশঙ্কা তৈরি হয়। আইনশৃঙ্খলার অবনতির সম্ভাবনা এড়াতে রাজ্য সরকার অনুষ্ঠান স্থগিত রাখার নির্দেশ দেয়।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতা বরাবরই বাংলার সম্প্রীতির রাজনীতির প্রতীক। বিজেপি যেখানে ধর্মীয় মেরুকরণের রাজনীতি করছে, সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস মুসলিম ভোটব্যাংক ধরে রাখার পাশাপাশি হিন্দু ভোটারদেরও আস্থায় রাখার কৌশল নিয়েছে।

বিশ্লেষক সুশান্ত ভট্টাচার্যের ভাষায়, “মমতা একইসঙ্গে মুসলিম ও হিন্দু উভয়ের কাছেই গ্রহণযোগ্য। তাঁর আপসকে দুর্বলতা বলা যাবে না, এটি বাংলার বহুত্ববাদী রাজনীতির বাস্তবতা।”

অপর বিশ্লেষক মেহেদী হাসান মনে করেন, “বিজেপি অবশ্যই এই মন্তব্যকে নির্বাচনী প্রচারে ব্যবহার করবে। কিন্তু সাধারণ ভোটাররা স্থিতিশীলতা চাইবে। তাই এটি তেমন বড় ইস্যু নাও হতে পারে।”

প্রতিক্রিয়া তৃণমূল ও বিরোধী শিবিরে

তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ মহল বলছে, এটি সম্প্রীতির রাজনীতি ভাঙার প্রচেষ্টা মাত্র। মমতা বারবার দেখিয়েছেন, তিনি কোনো বিশেষ ধর্মীয় গোষ্ঠীর জন্য রাজনীতি করেন না।

অন্যদিকে, বিজেপি নেতা সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেছেন, “এটা ভোটের আগে আপসের রাজনীতি।” বাম শিবিরের বক্তব্য, “হিন্দু-মুসলিম দুই দিক সামলাতে গিয়েই মমতা বিভ্রান্তির মধ্যে পড়ছেন।”

প্রভাব কতটা পড়বে?

বিশেষজ্ঞদের মতে, জাভেদ আখতারের বক্তব্য কিংবা উর্দু উৎসব বাতিল—এসব সাধারণ ভোটারদের কাছে খুব একটা বড় বিষয় নয়। কারণ এখন রাজ্যের রাজনীতি মূলত কর্মসংস্থান, দুর্নীতি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের মতো বাস্তব ইস্যুকে ঘিরেই গড়ে উঠছে।

তবে বিরোধী দলগুলো নিঃসন্দেহে এই ইস্যুকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করবে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ