মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসনের অর্থছাঁটাই ও নীতিগত অনিশ্চয়তার কারণে গবেষণা খাতে অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় সুযোগ কাজে লাগাতে উদ্যোগ নিচ্ছে কানাডা। বিশ্বসেরা গবেষকদের আকর্ষণে দেশটি নতুন তহবিল, অভিবাসন সুবিধা ও দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়াসহ বড় ধরনের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে, অটোয়া ঘোষিত ১.৭ বিলিয়ন কানাডীয় ডলারের এই পরিকল্পনার লক্ষ্য আগামী ১০ বছরে হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক গবেষককে দেশে নিয়ে আসা। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু প্রতিষ্ঠিত গবেষক যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে কানাডায় যাচ্ছেন। তাঁদের মধ্যে আছেন এমআইটির প্রখ্যাত কানাডীয় অ্যাস্ট্রোফিজিসিস্ট সারা সিগার, যিনি আগামী সেপ্টেম্বর থেকে টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেবেন। তিনি জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা বাজেট সংকোচন ও ভবিষ্যতের অনিশ্চয়তা তাঁকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্তে বাধ্য করেছে।
কানাডার টরন্টো, আলবার্টা, ম্যাকমাস্টার ও ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বলছে—নতুন অর্থায়ন তাদেরকে বৈশ্বিক মানসম্পন্ন অধ্যাপক ও গবেষক নিয়োগে বড় সুযোগ দেবে। টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় ইতিমধ্যেই জলবায়ুবিজ্ঞান, কোয়ান্টাম কম্পিউটিংসহ বিভিন্ন বিষয়ে ১০০টি নতুন পোস্টডক্টরাল পদ ঘোষণা করেছে।
অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন বাজেট সংকটে পড়ছে। এমআইটির প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি জানিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটি বছরে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন ডলার বাজেট ঘাটতির মুখে, যার ফলে একাধিক গবেষণা প্রকল্প কমাতে বা স্থগিত করতে হয়েছে।
কানাডার নতুন নীতির অংশ হিসেবে—
-
যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-১বি ভিসাধারী গবেষকদের দ্রুত ভিসা সুবিধা দেওয়া হবে
-
২০২৬ সাল থেকে মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের স্টাডি পারমিট কোটা থেকে বাদ দেওয়া হবে
-
তাঁদের ভিসা প্রক্রিয়ার সময় কমিয়ে ১৪ দিন করা হবে
তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। তথ্য বলছে, কানাডায় উচ্চশিক্ষিত অভিবাসীদের প্রায় অর্ধেকই পাঁচ বছরের মধ্যে দেশ ত্যাগ করেন, মূলত কম বেতন ও সীমিত সুযোগের কারণে।
তবুও বিশেষজ্ঞদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণা খাতে অস্থিরতার এই সময়টি কানাডার জন্য এক ‘ঐতিহাসিক সুযোগ’—যা কাজে লাগাতে পারলে দেশটি আগামী দশকে বৈশ্বিক গবেষণা ও উদ্ভাবনের অন্যতম শক্তিশালী কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে।