ধর্ষণ ও ভিডিও ভাইরাল: রিমান্ড শেষে ৪ আসামি কারাগারে

প্রকাশিত: ৬:৫২ অপরাহ্ণ, জুলাই ৮, ২০২৫

ধর্ষণ ও ভিডিও ভাইরাল: রিমান্ড শেষে ৪ আসামি কারাগারে

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় ঘরে ঢুকে এক নারীকে ধর্ষণ ও নির্যাতনের পর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার মামলায় গ্রেপ্তার চার যুবককে তিন দিনের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (৮ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লার আমলি আদালত-১১-এর বিচারক মমিনুল হকের আদালতে আসামিদের হাজির করা হলে শুনানি শেষে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মুরাদনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন এবং আদালত পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাদেকুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তাঁরা জানান, ঘটনার পর আসামিদের সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে তাঁদের আদালতে হাজির করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন মো. সুমন (২২), রমজান (২৩), মো. আরিফ (২৪) ও মো. অনিক (২২)।

পুলিশ জানায়, গত ২৬ জুন রাতে উপজেলার একটি গ্রামে ওই নারী একা ঘরে অবস্থান করছিলেন। সে সময় স্থানীয় চার যুবকসহ আরও কয়েকজন তাঁর ঘরে ঢুকে জোরপূর্বক শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণ করেন।

ঘটনার সময় তাঁরা ওই দৃশ্য ভিডিও ধারণ করেন এবং পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা শুধু ওই নারীকে নয়, তাঁর সঙ্গে থাকা ফজর আলী নামের এক যুবককেও মারধর করেন এবং তাঁকে হত্যার হুমকি দেন।

ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে ভুক্তভোগী নারী ও তাঁর পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং অভিযুক্ত চার যুবককে গ্রেপ্তার করে।

মামলাটি পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ একাধিক আইনে রুজু করা হয়েছে।

উপপরিদর্শক রুহুল আমিন বলেন, ‘আমরা সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলাম, আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত শনিবার থেকে গতকাল সোমবার পর্যন্ত তিন দিন রিমান্ডে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তদন্তের স্বার্থে সেগুলো এখন প্রকাশ করা হচ্ছে না। সময়মতো বিস্তারিত জানানো হবে।’

উপপরিদর্শক জানান, আজ আদালতে চারজনের মধ্যে দুজনের জবানবন্দি দেওয়ার কথা জানালেও পরে তাঁরা তা দেননি। পরে আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠান।

কুমিল্লা আদালত পুলিশের ওসি সাদেকুর রহমান বলেন, রিমান্ড শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাপ্ত তথ্য আদালতে উপস্থাপন করেছেন। আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে মুরাদনগর এলাকার ঘটনাটি নিয়ে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। মানবাধিকারকর্মী, নারী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং ভুক্তভোগী পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং মামলার তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ