
সংকটাপন্ন অবস্থায় এভারকেয়ার হাসপাতালে খালেদা জিয়া, চিকিৎসায় যুক্তরাজ্যের ৪ চিকিৎসক যোগদান
রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে গুরুতর অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। লিভার, কিডনি ও ফুসফুসের জটিলতাসহ একাধিক মারাত্মক শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন তিনি। গত এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে তাঁকে।
আজ বুধবার সকালে যুক্তরাজ্য থেকে আসা ৪ সদস্যের একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় পৌঁছে চিকিৎসায় যুক্ত হয়েছে। ড. রিচার্ড বিউলের নেতৃত্বে দলটি খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন শুরু করেছে। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানিয়েছেন, এরই মধ্যে চীন থেকেও আরও একটি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল ঢাকায় পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, যুক্তরাজ্যের দলটি উন্নত চিকিৎসা পরিকল্পনা করতে এবং স্থানীয় চিকিৎসকদের সঙ্গে সমন্বয় করতে এসেছে। তাঁরা সার্বিক পরিস্থিতির ওপর নজর রেখে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দিচ্ছেন।
গত ২৩ নভেম্বর অসুস্থতা অনুভব করলে গভীর রাতে খালেদা জিয়াকে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক পরীক্ষায় লিভারের জটিলতা, কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন সমস্যা ধরা পড়ে। এসব জটিলতা একসঙ্গে দেখা দেওয়ায় চিকিৎসা প্রক্রিয়া আরো কঠিন হয়ে পড়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, একাধিক সমস্যা ওঠানামা করায় পরিস্থিতি কখনো উন্নতির দিকে গেলেও আবার অবনতি ঘটছে। তবে খালেদা জিয়া চিকিৎসা গ্রহণ করতে পারছেন—এটি ইতিবাচক লক্ষণ বলে মন্তব্য তাঁদের।
দেশি-বিদেশি মিলিয়ে একটি বড় চিকিৎসক দল তাঁর চিকিৎসায় যুক্ত রয়েছে। বাংলাদেশ, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, চীন, কাতার, সৌদি আরব, ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষজ্ঞরা সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন। দেশের মেডিকেল বোর্ডে রয়েছেন অধ্যাপক এফ এম সিদ্দিকীসহ নয়জন সিনিয়র বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য থেকেও একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বোর্ডে যুক্ত রয়েছেন।
খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, মেডিকেল বোর্ড প্রয়োজন মনে করলে বিদেশে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে।
ড. ইউনূসের হাসপাতালে যাওয়া
গতকাল সন্ধ্যায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা জানার জন্য হাসপাতালে যান প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাঁকে বিএনপি চেয়ারপারসনের কক্ষ পর্যন্ত নিয়ে যান। উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন ও শাহাবুদ্দিন তালুকদার। এর আগে দুপুরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারও তাঁর খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে যান।