ঢাকা: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরাপত্তা ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) দ্বারস্থ হয়েছেন দুই সম্ভাব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী। তাঁরা হলেন কিশোরগঞ্জ–৪ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা এবং আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল–৩ (বাবুগঞ্জ–মুলাদী) আসনের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।
আজ বুধবার তাঁরা আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে গিয়ে পৃথকভাবে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
কিশোরগঞ্জ–৪ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী রেহা কবির সিগমা প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন, নির্বাচন কমিশনার আবদুর রহমানেল মাছউদ ও মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নিজের নিরাপত্তা, কর্মী–সমর্থকদের জীবনঝুঁকি এবং নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিয়ে লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে তিনি বলেন, আসন্ন ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, পক্ষপাতমুক্ত ও নির্বিঘ্ন করার বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের অঙ্গীকার থাকলেও সেই পরিবেশ ইতোমধ্যে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে তদন্ত করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান জানান তিনি।
রেহা কবির সিগমা অভিযোগ করেন, কিশোরগঞ্জ–৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে গণসংযোগ শুরু করার পর ব্যাপক সমর্থন পেলেও তাঁর আইনানুগ প্রচার কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে অষ্টগ্রাম থানার পুলিশ। তিনি দাবি করেন, ১৬ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে তাঁর এক নিরপরাধ কর্মীকে গ্রেপ্তার করে ভুয়া মামলায় আদালতে পাঠানো হয়েছে, যা কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে এবং নির্বাচনী কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে তিনি বলেন, তাঁর কর্মী মো. কিয়ামত আলী (৫০) একজন নিরীহ ও জনপ্রিয় ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধে আগে কোনো মামলা বা অভিযোগ ছিল না। তাঁকে ২০২৪ সালের ৯ নভেম্বর করা একটি মামলায় আসামি দেখানো হয়েছে, যদিও তিনি এজাহারভুক্ত নন। এটি পরিকল্পিতভাবে কর্মীদের ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নির্বাচনকে প্রশ্নাতীত ও সুষ্ঠু করার জন্য সিইসির হস্তক্ষেপ কামনা করেন রেহা কবির সিগমা। পরে গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, “পুলিশ ভীতি সৃষ্টি করছে। আমি ও আমার কর্মীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। তাই ইসি ও প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা চেয়েছি।”
অন্যদিকে, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বরিশাল–৩ আসনের প্রার্থী আসাদুজ্জামান ফুয়াদ নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনিও প্রার্থী হিসেবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কার কথা তুলে ধরেন।
এ বিষয়ে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, “ব্যারিস্টার ফুয়াদ এসেছিলেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, পুলিশ প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করছে না। আমরা সার্বিকভাবে সব প্রার্থীর নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “সব প্রার্থী বিজয়ী হতে পারবেন না। জনগণ যাঁকে বেশি ভোট দেবেন, তিনিই বিজয়ী হবেন।” এ সময় তিনি সব প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানান।