আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে নিজের করা আগের ভবিষ্যদ্বাণী ধীরে ধীরে সত্য প্রমাণিত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, নির্বাচন সহজ হবে না—এ কথা আগেই বলেছিলেন, আর সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে সেটির প্রমাণ মিলছে।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় রাজধানীর খামারবাড়ির বাংলাদেশ কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, “আমি আগে বলেছিলাম—নির্বাচন অত সহজ হবে না, ষড়যন্ত্র থেমে নেই। গত কয়েকদিনের ঘটনা, গতকালের ঘটনা, চট্টগ্রামে আমাদের প্রার্থীর ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা—এসবই প্রমাণ করছে, আমি যা বলেছিলাম তা আস্তে আস্তে সত্য হচ্ছে।”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে মতভেদ ভুলে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা যদি নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য কমিয়ে ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে দেশ ধ্বংসের পথে চলে যাবে। অতীতেও দেশ বহুবার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে গিয়েছিল, কিন্তু শহীদ জিয়া ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সেই সংকট থেকে দেশকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।”
ষড়যন্ত্রের বিষয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “বিভিন্ন সূত্রের খবর বলছে, ষড়যন্ত্র আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আমাদের ভয় পেলে চলবে না। জনগণকে সাহস দিতে হবে। যত বেশি ঐক্যবদ্ধ হব, ততই ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটবে। যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে।”
চট্টগ্রাম ও ঢাকায় বিএনপি প্রার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, এসব ঘটনার মাধ্যমে কেউ রাজনৈতিক ফায়দা লোটার চেষ্টা করছে। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে তারেক রহমান খাল খনন, স্বাস্থ্য কার্ড, কৃষক কার্ড, ফ্যামিলি কার্ড, শিক্ষা ব্যবস্থা, বেকার সমস্যা, তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন, বায়ু ও পানি দূষণ রোধসহ বিএনপির বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনা ও সেগুলোর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া তুলে ধরেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “আমি কী পেলাম—এই চিন্তা বাদ দিতে হবে। সময় এসেছে, দেশ ও জাতির জন্য আমি কতটুকু করতে পারলাম, সেটাই ভাবার। আজ আপনি যদি দেশের জন্য কিছু করেন, আগামী দিনে আপনার সন্তান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ থাকবে।”
শেষে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনের মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এখন আর ঘরে বসে থাকার সময় নেই। এই যুদ্ধে আমাদের জিততেই হবে। আর এই জয়ের সবচেয়ে বড় শক্তি হলো বাংলাদেশের জনগণ।”
অনুষ্ঠানে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।