কাঠমান্ডু, নেপাল: নেপালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ঘটে যাওয়া সহিংসতায় অন্তত ১৯ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক তার পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানী কাঠমান্ডু এবং দেশের অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে এই প্রাণহানি ঘটে। নিহতদের মধ্যে শুধুমাত্র কাঠমান্ডুতেই ১৬ জন। আহত হয়েছেন ৩৪৭ জন, যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
যুবসমাজ, বিশেষ করে জেন-জেড প্রজন্ম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধ হওয়ার পর রাস্তায় বিক্ষোভে নেমেছে। সেনা মোতায়েন এবং গুলি চালানোর নির্দেশের ফলে সহিংসতা আরও বৃদ্ধি পায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রমেশ লেখক জানান, “এত মানুষের প্রাণহানি অচিন্তনীয়। নৈতিকভাবে আমার দায়িত্ব থাকা উচিত নয়।”
সরকারের দমননীতির তীব্র সমালোচনা করেছে রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র পার্টি (আরএসপি)। দলের সাধারণ সম্পাদক কবীন্দ্র বুর্লাকোটি এক বিবৃতিতে বলেছেন, সরকার জেন-জেড প্রজন্মের ওপর ‘নৃশংস দমননীতি’ প্রয়োগ করেছে। তারা প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলির পদত্যাগ এবং নতুন জাতীয় নির্বাচনের দাবি করেছেন।
সহিংসতা কেবল কাঠমান্ডুতেই সীমাবদ্ধ ছিল না। নেপালের বুটওয়াল, ভৈরহাওয়া, ইটাহারিসহ কয়েকটি জেলায় কারফিউ জারি করা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলীয় দামায় প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয় এবং ইস্ট-ওয়েস্ট হাইওয়ে অবরোধ করে আগুন জ্বালানো হয়।
চলমান সংকট মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী অলির বাসভবনে জরুরি মন্ত্রিসভা বৈঠক চলছে। তবে কারফিউ ও কঠোর নিরাপত্তার মাঝেও বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় অবস্থান করছেন। নেপাল এখন মানবিক বিপর্যয় এবং গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবির চাপের মুখে এক অনিশ্চিত মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে।