পঞ্চগড়ে বিষপানে এক মা ও ছেলের মৃত্যু

প্রকাশিত: ১০:৫০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১৭, ২০২৫

পঞ্চগড়ে বিষপানে এক মা ও ছেলের মৃত্যু

বিষপানে এক মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে প্রায় এক সপ্তাহ হাসপাতালে চিকিৎধীন থাকার পর এক ঘণ্টার ব্যবধানে ওই মা ও ছেলের মৃত্যু হয়।

 

স্বামীর অনলাইন জুয়ার আসক্তি ও সংসারে অভাব–অনটনের কারণে পারিবারিক কলহের জেরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেছেন বিউটির স্বজনেরা। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার স্বামী।

 

মায়ের নাম বিউটি আক্তার (২৮) ও তার ছেলের নাম মুসা (৫)। তারা পঞ্চগড় জেলা শহরের নিমনগড় এলাকার মতিউর রহমানের স্ত্রী ও ছেলে।

 

পঞ্চগড় সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এইচ এস এম সোহরাওয়ার্দী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আমরা আত্মহত্যার কারণ জানার চেষ্টা করছি। পরিবারের লোকজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

নিহত ব্যক্তিদের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মতিউর ও বিউটি দম্পতির এক ছেলে ও এক মেয়ে। মেয়ে মাইশার বয়স ১১ বছর। মতিউর মসজিদে খাদেমের কাজ করতেন। পরে পঞ্চগড় বাসস্টান্ডে চা বিক্রি করতেন। ব্যবসায় বড় লোকসান হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন তিনি। আসক্ত হয়ে পড়েন জুয়ায়। সংসারে নেমে আসে অভাব–অনটন। এ নিয়ে স্বামী–স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হতো। বিউটি স্বামীর এমন কর্মকাণ্ডে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। ১১ এপ্রিল মতিউর তার স্ত্রীকে না জানিয়ে তার শ্বশুরবাড়ি যান। সেখান থেকে মোবাইলে বিউটির সঙ্গে বাগ্‌বিতণ্ডা হয় তার।

 

এর কিছুক্ষণ পর তারা জানতে পারেন, বিউটি তার ছেলে মুসাকে বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ পান করেছেন। তবে মেয়ে মাইশা পালিয়ে যাওয়ায় তাকে খাওয়াতে পারেননি। পরে তাদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে তাদের অবস্থার উন্নতি না হলে তাদের ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু অর্থসংকটে তাদের ঢাকায় না নিয়ে ১৫ এপ্রিল দিবাগত রাত ২টায় আবার পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ দুপুরে ছেলে মুসা ও এর এক ঘণ্টা পরে মা বিউটি মারা যান। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

 

বিউটির মামা খোরশেদ আলম বলেন, ছেলেটি জুয়া খেলে সব শেষ করে ফেলেছে। আগে ভালো ব্যবসা করত। তবে বিউটি কেন এমন মর্মান্তিক সিদ্ধান্ত নিল, তা জানি না।

 

মতিউর রহমান অনলাইন জুয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ব্যবসায় তিন লাখ টাকা লোকসান করেছি। সংসারে অভাব, তাই বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করছিলাম। পাসপোর্টও করেছি। আমার স্ত্রীকে না জানিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ায় তার সঙ্গে আমার ও আমার শ্যালকের কথা কাটাকাটি হয়। আমার স্ত্রীর রাগ একটু বেশি। এর কিছুক্ষণ পরেই শুনি আমার স্ত্রী আমার ছেলেকে বিষ খাইয়ে নিজেও বিষ খেয়েছে। টাকা না থাকায় তাদের ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা করাতে পারিনি।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ