পাকিস্তানের লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস (এলইউএমএস) দেশভাগের পর প্রথমবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্কৃত ভাষা শেখানোর কোর্স চালু করেছে। ‘সংস্কৃতের পরিচিতি’ (Introduction to Sanskrit) নামে এই কোর্স সম্প্রতি শেষ হয়েছে এবং দেশটির শিক্ষাক্ষেত্রে এটি একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এলইউএমএস তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে, “বিশ্বের প্রাচীনতম ও প্রভাবশালী ভাষাগুলোর মধ্যে একটি সংস্কৃত। ১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর পাকিস্তানে এটি খুব কমই পড়ানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে এর পুনরাবির্ভাব দক্ষিণ এশিয়ার সম্মিলিত বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের একটি নতুন অঙ্গীকার।”
কোর্সটির নেতৃত্বে রয়েছেন ফোরম্যান ক্রিশ্চিয়ান কলেজের সমাজবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক শাহিদ রশীদ। তিনি বলেন, “সংস্কৃত দক্ষিণ এশিয়ার দার্শনিক, সাহিত্যিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। পাকিস্তানে সংস্কৃত পড়ানো ক্ষুদ্র হলেও তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ।”
রশীদ আরও বলেন, “অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেন—কেন সংস্কৃত শিখছি? আমি বলি, কেন শিখব না। এটি পুরো অঞ্চলের ঐক্যের ভাষা। সংস্কৃত কোনো ধর্মের সম্পত্তি নয়।”
এলইউএমএসের শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গুরমানি সেন্টারের পরিচালক আলি উসমান কাসমি জানিয়েছেন, শুরুতে সপ্তাহে একটি উন্মুক্ত প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছিল, যেখানে ছাত্র, গবেষক ও শিক্ষাবিদ অংশ নিতে পারতেন। ভালো সাড়া পাওয়ায় পরে এটি পূর্ণাঙ্গ কোর্স হিসেবে চালু করা হয়। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে ২০২৭ সালের স্প্রিং সেমিস্টার থেকে কোর্সটি বছরব্যাপী পড়ানো সম্ভব হবে।
এলইউএমএস জানায়, এই উদ্যোগ ছাত্র ও গবেষকদের মধ্যে প্রাচীন ভাষা ও দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাস, দর্শন ও সংস্কৃতির প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করেছে। ভবিষ্যতে মহাভারত ও ভগবদ্গীতার ওপরও কোর্স চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।