
পাকিস্তানে এই মুহূর্তে শীর্ষ সামরিক নেতৃত্ব আর রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে দ্বন্দ্বের গুঞ্জন তুঙ্গে। সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির–এর নতুন পদ সংযুক্ত প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রধান (CDF)—এই নিয়োগের প্রজ্ঞাপন আটকে গেছেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ সই না করায়—এমনটাই বলছে ভারতীয় গণমাধ্যম।
পাকিস্তানে নতুন ২৭তম সাংবিধানিক সংশোধনীতে CDF পদ তৈরি করা হয়, যেটা সেনাপ্রধানের সঙ্গেই যুক্ত একটি দ্বৈত দায়িত্বের পদ।
এই পরিবর্তনের ফলে জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ কমিটি (CJCSC)—এতদিন যেটা ছিল তিন বাহিনীর সমন্বয়কারীর পদ—সেটা বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে।
২৯ নভেম্বর মুনিরের মূল ৩ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। সেই সময়েই নতুন পদ ঘোষণা হওয়ার আশা ছিল।
ভারতীয় বিশ্লেষকদের দাবি—শাহবাজ শরিফ ইচ্ছে করে দেশের বাইরে আছেন (বাহরাইন → লন্ডন), যেন তিনি সই না করতে পারেন।
এ কারণে সিডিএফ–এর নিয়োগ “ঝুলে গেছে”, আর সামরিক নেতৃত্ব পড়েছে বিড়ম্বনায়।
বিশ্লেষক তিলক দেবেশের দাবি—“ধরা গেলে মুনিরের মেয়াদ শেষ, তাহলে পাকিস্তানের এখন বৈধ সেনাপ্রধানই নাই”—এমন কথাও উঠছে।
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের উপদেষ্টা রানা সানাউল্লাহ এই অভিযোগ পুরোপুরি উড়িয়ে দিছে।
তাঁর ভাষায়—সবই ‘অপ্রয়োজনীয় গুজব’, শাহবাজ দেশে ফিরলেই সব হবে।
আইনমন্ত্রী আজম নাজির তারার বলেন—মুনিরের মেয়াদ আইনগতভাবে সুরক্ষিত, সিডিএফ করার জন্য শুধু আনুষঙ্গিক কাগজপত্র বাকি।
নতুন CDF পদ, আগের CJCSC পদ বিলুপ্তি, আর জাতীয় কৌশলগত কমান্ড (NSC)–এর নতুন চার তারকা কমান্ডার নিয়োগ—সবই পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত।
এই পুনর্গঠনে বিমানবাহিনী–নৌবাহিনীর ক্ষমতার অবস্থান ভবিষ্যতে কী হবে—এ নিয়ে বড় প্রশ্ন।
পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবস্থাপনা কোন কর্তৃপক্ষের অধীনে যাবে—এটাও এখন অস্পষ্ট।
পাকিস্তানের সামরিক কাঠামোয় এটা দশকগুলোর সবচেয়ে বড় পরিবর্তন।
আর এই পরিবর্তনের ঠিক মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর সই না হওয়া—সেটাই তৈরি করছে রাজনৈতিক উত্তেজনা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এই পরিস্থিতি ‘অস্বাভাবিক ও বিপজ্জনক’, কারণ শীর্ষ সামরিক দায়িত্ব অস্থির হয়ে পড়ছে।
পাকিস্তানে সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের নতুন CDF পদে নিয়োগ প্রায় প্রস্তুত। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর সই না হওয়ায় এটা আটকে আছে—এমন গুঞ্জনেই দেশ–বিদেশে আলোচনা। সরকার বলে—সব ঠিকঠাক আছে, শুধু সময়ের ব্যাপার। কিন্তু সামরিক ঐক্যবদ্ধ কাঠামোতে বড় পরিবর্তন আসায় পরিস্থিতি বেশ টানটান।