ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে বিক্ষোভকারীদের বাধার কারণে ইসরায়েলি অর্কেস্ট্রার একটি কনসার্ট পণ্ড হয়েছে। কনসার্ট চলাকালে ধোঁয়ার ফ্লেয়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভকারীরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করলে দর্শকদের সঙ্গে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আমিরাতভিত্তিক দ্য ন্যাশনাল জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার রাতে প্যারিস ফিলহারমনি কনসার্ট হলে এ ঘটনা ঘটে। আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানায়, তিন দফায় কিছু দর্শক কনসার্ট ব্যাহত করার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে দুবার ধোঁয়া ছড়ানো হয়। পরে অন্য দর্শকেরা বাধা দিলে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দিলে কনসার্ট পুনরায় শুরু হয়ে শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী লরঁ নুনেজ এ ঘটনাকে “গুরুতর বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি” বলে উল্লেখ করে কঠোর নিন্দা জানান।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই উত্তেজনা বিরাজ করছিল আয়োজক সংস্থা ও শ্রমিক ইউনিয়ন ‘জেনারেল কনফেডারেশন অব লেবার’ (সিজিটি)-এর মধ্যে। ইউনিয়নটি দাবি করেছিল, কনসার্ট হলে যেন দর্শকদের গাজার পরিস্থিতি ও ইসরায়েলের কথিত যুদ্ধাপরাধ সম্পর্কে অবহিত করা হয়।
তাদের বক্তব্যে বলা হয়, “ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা চলছে, আর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।”
তবে কনসার্ট হল কর্তৃপক্ষ এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে জানায়, তারা রাজনৈতিক ইস্যুতে শিল্পীদের অবস্থান নিতে বাধ্য করে না।
এদিকে ফ্রান্সের কিছু বামঘেঁষা রাজনীতিক ইসরায়েলি শিল্পীদের বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন। ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য মানোঁ ওব্রি বলেন, “রাশিয়া যখন ইউরোভিশন থেকে বাদ পড়েছিল, কেউ অবাক হয়নি। ইসরায়েলও যুদ্ধাপরাধে লিপ্ত—তাদের প্রতিও একই নীতি প্রযোজ্য হওয়া উচিত।”
উল্লেখ্য, ইসরায়েলি অর্কেস্ট্রার পরিচালক লাহাভ শানি এর আগে বেলজিয়ামের ফ্ল্যান্ডার্স ফেস্টিভ্যালেও একই ধরনের বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। সে সময় তাঁর কনসার্ট বাতিল করা হয়। তিনি বলেছিলেন, “গাজার মানুষের দুর্ভোগ আমাদের কষ্ট দেয়, কিন্তু আমাকে রাজনৈতিক বিবৃতি দিতে বাধ্য করা দুঃখজনক।”