নিজস্ব প্রতিবেদক
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল নেতা মো. জুবায়েদ হোসেন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাজধানীর বিভিন্ন স্থান থেকে তাঁদের আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রেমের সম্পর্কের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
লালবাগ বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. আমিনুল কবীর তরফদার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন,
“ঘটনার পর সিসিটিভি ফুটেজে যাদের দেখা গেছে, তাদেরকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তারা আটক ওই ছাত্রীর বন্ধু।”
এদিকে লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন,
“হত্যার পেছনে প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি স্পষ্ট। তবে খুনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। ঘটনার সব দিক খতিয়ে দেখা হবে।”
পুলিশ জানায়, ঘটনার বিষয়ে আগামীকাল (মঙ্গলবার) সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত তথ্য জানানো হবে।
আজ সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ভবনটি পাঁচতলা বিশিষ্ট, নিচতলায় দোকান রয়েছে। ভবনের সিঁড়িতে ও দেয়ালে রক্তের দাগ দেখা গেছে। জুবায়েদ ভবনের পাঁচতলায় টিউশনি করতেন।
ভবনের নিচতলায় আটক ছাত্রীর নানি পরিচয় দেওয়া এক নারী বলেন,
“রোববার বিকেল চারটার দিকে নামাজের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। হঠাৎ বাইরে চিৎকার শুনে বের হয়ে দেখি, লোকজন জড়ো হয়েছে—একজনের লাশ পড়ে আছে। পরে পুলিশ আসে।”
তিনি আরও জানান,
“বাসাটি নতুন। এর আগে এখানে পুরোনো একটি বাসা ছিল, যেখানে জুবায়েদের ছাত্রীর বন্ধু ভাড়া থাকতেন। দুই বছর আগে তারা এখান থেকে চলে যান।”
এদিকে আজ সকালে মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে জুবায়েদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, তাঁর গলার ডান পাশে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন এবং দুই হাতে আঁচড়ের দাগ রয়েছে।
হাসপাতালের মর্গের সামনে জুবায়েদের বাবা মোবারক হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন,
“ছেলে বলেছিল, ‘আর ছয় মাস পর পড়াশোনা শেষ হবে, তারপর চাকরি করব। তখন আর তোমার কষ্ট করতে হবে না।’ সব স্বপ্ন শেষ হয়ে গেল। আমি ছেলে হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।”
🔴 উল্লেখ্য, গত রোববার বিকেলে লালবাগ এলাকার একটি ভবনের পাঁচতলায় টিউশনি করতে গিয়ে জুবায়েদ খুন হন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।