
মাদারীপুরের এক যুবক ফয়সাল মোড়ল (২১) তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-এর সঙ্গে যোগ দিয়ে পাকিস্তানে লড়াই করার সময় নিহত হয়েছেন। ফয়সাল দুবাই যাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন, কিন্তু পাকিস্তানে গিয়ে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন টিটিপিতে যুক্ত হন।
গত শুক্রবার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানে তিনি নিহত হন। পাকিস্তানের গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবি দেখে তার পরিবার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এটি বাংলাদেশের তরুণদের মধ্যে টিটিপিতে যোগ দেওয়ার প্রথম ঘটনা নয়। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে উত্তর ওয়াজিরিস্তানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বোমা হামলায় টিটিপির ৫৪ সদস্যের সঙ্গে বাংলাদেশি আহমেদ জোবায়ের নিহত হয়েছিলেন। গত এক বছরে অন্তত চারজন বাংলাদেশি টিটিপির সঙ্গে যুক্ত হয়ে পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) ২০০৭ সালে পাকিস্তানের ফেডারেল শাসিত উপজাতি এলাকায় (এফএটিএ) বিভিন্ন জঙ্গি গোষ্ঠীকে একত্রিত করে গঠিত হয়। এর প্রাথমিক লক্ষ্য পাকিস্তান সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা এবং শরিয়ার চরমপন্থী ব্যাখ্যা অনুযায়ী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা।
২০০৭–২০২০ সালের মধ্যে বিভিন্ন নেতৃত্বের মৃত্যু ও অভিযানজনিত কারণে গোষ্ঠীটি দুর্বল হয়ে যায়। নুর ওয়ালি মেহসুদের নেতৃত্বে ২০২০ সাল থেকে টিটিপি আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে। আফগানিস্তানের তালেবান সরকারও টিটিপিকে আশ্রয় দেয়। টিটিপি প্রায়শই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা চালায়।
টিটিপি অর্থ সংগ্রহ করে চাঁদা, অপহরণ ও অন্যান্য অনুদানের মাধ্যমে। সদস্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে তারা আফগানিস্তান-পাকিস্তান সীমান্তের পশতুন উপজাতি এবং অন্যান্য অঞ্চলকে টার্গেট করে, পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও সদস্য আকর্ষণ করে।
২০২১ সালের শেষ দিকে যুদ্ধবিরতি শেষ হওয়ার পর টিটিপি বিশেষ করে খাইবার পাখতুনখাওয়া ও বেলুচিস্তান প্রদেশে হামলা বাড়িয়েছে। নুর ওয়ালি মেহসুদের নেতৃত্বে ইসলামাবাদ, করাচি ও কোয়েটার মতো বড় শহরেও তাদের কার্যক্রম সম্প্রসারিত হয়েছে।
সাম্প্রতিক পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর অভিযানে ১৭ জন টিটিপি সদস্য নিহত হয়েছেন। এ অভিযানে বাংলাদেশি ফয়সাল মোড়লও প্রাণ হারিয়েছেন।