
নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার অন্তঃসত্ত্বা নারী সোনালী খাতুন ও তাঁর পরিবারের পাঁচ সদস্যকে দিল্লি পুলিশ ভুলবশত ‘অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। প্রায় চার মাস ধরে বন্দিদশায় কাটানোর পরও এখনো তাঁদের দেশে ফেরার নিশ্চয়তা মিলছে না।
সোনালী খাতুন, তাঁর স্বামী দানিশ শেখ, তাঁদের সন্তান ও আত্মীয়দের সঙ্গে দিল্লিতে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন। ২৬ জুন দিল্লি পুলিশ ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ সন্দেহে তাঁদের আটক করে আসাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশব্যাক করে। পরবর্তীতে তাঁরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে বন্দী হন।
সোনালীর বাবা ভাদু শেখ এ ঘটনায় কলকাতা হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস মামলা দায়ের করেন। আদালত কেন্দ্রীয় সরকারকে চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দেশে ফেরানোর নির্দেশ দেয় এবং জানায়, তাঁদের সবার বৈধ আধার কার্ড আছে, যা ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ।
এরপর বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালতও তাঁদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে নিরাপদ প্রত্যাবাসনের নির্দেশ দেয়। তবে প্রশাসনিক ও কূটনৈতিক জটিলতায় প্রক্রিয়াটি এখনো শেষ হয়নি।
এদিকে জেলে বন্দী অবস্থায় অন্তঃসত্ত্বা সোনালী খাতুনের শারীরিক অবস্থা অবনতি হয়েছে। তাঁর প্রয়োজনীয় চিকিৎসা, বিশেষ করে আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়নি বলে জানা গেছে।
পশ্চিমবঙ্গ অভিবাসী শ্রমিক কল্যাণ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সামিরুল ইসলাম এই ঘটনায় বিজেপিকে দায়ী করে বলেন, “দরিদ্র বাংলাভাষী মানুষদের অন্যায়ভাবে বাংলাদেশি তকমা দিয়ে নির্বাসিত করা হচ্ছে।”
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে প্রত্যাবাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এখনো পর্যন্ত সোনালীদের দেশে ফেরার নির্দিষ্ট তারিখ নির্ধারিত হয়নি।