শহীদ মুশতাক ও শহীদ জুয়েল একাদশের ক্রিকেট ম্যাচ মানেই বিজয় দিবসে সাবেক ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আব্দুল হালিম চৌধুরী জুয়েল ও শহীদ মুশতাক আহমেদের স্মরণে ১৯৭২ সালে শুরু হওয়া এই ঐতিহ্যবাহী ম্যাচটি প্রতি বছরই বিজয় দিবসে অনুষ্ঠিত হয়। নিয়ম মেনে এবারও বিজয় দিবসে অনুষ্ঠিত হলো এই বিশেষ ম্যাচ, যেখানে সাবেকদের পাশাপাশি বর্তমান ক্রিকেটারদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো।
এবার বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজন করা হয় অলস্টার টি-টোয়েন্টি প্রদর্শনী ম্যাচ। এতে টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর নেতৃত্বাধীন অপরাজেয় দলের মুখোমুখি হয় ওয়ানডে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন অদম্য দল। রোমাঞ্চকর এই ম্যাচে ৩ উইকেটে জয় পায় মিরাজের দল।
টস হেরে আগে ব্যাট করে অপরাজেয় দল ৯ উইকেটে ১৬৬ রান সংগ্রহ করে। ইনিংসের শুরুতেই দলটি ধাক্কা খায়, রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমন। এরপর জিশান আলমের সঙ্গে অধিনায়ক শান্ত ৫০ রানের জুটি গড়েন। জিশান আলম সর্বোচ্চ ৪৪ রান করেন, আর অধিনায়ক শান্ত করেন ৩০ রান।
১৬৭ রানের লক্ষ্য তাড়ায় অদম্য দল শুরুতে ৪৮ রানের মধ্যেই ২ উইকেট হারালেও নাঈম শেখের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি। এবারের বিপিএলে কোটি টাকার বেশি দামে দল পাওয়া নাঈম ৪৪ বলে ৭৬ রানের ঝলমলে ইনিংস খেলেন। শেষ দিকে ম্যাচের উত্তেজনা বাড়লেও অধিনায়ক মিরাজ (১৪*) ও সাইফউদ্দিন (৫*) অপরাজিত থেকে ১৯.২ ওভারে দলের জয় নিশ্চিত করেন।
এর আগে সকালে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আরেক প্রস্তুতি ম্যাচে শহীদ মুশতাক একাদশ ৩৮ রানে শহীদ জুয়েল একাদশকে পরাজিত করে। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ১৫ ওভারের ম্যাচে মোহাম্মদ আশরাফুলের নেতৃত্বাধীন শহীদ মুশতাক একাদশ ৬ উইকেটে ১৩৮ রান তোলে। জবাবে মিনহাজুল আবেদীন নান্নুর নেতৃত্বাধীন শহীদ জুয়েল একাদশ ১৫ ওভার খেলে ৪ উইকেটে ১০০ রানের বেশি করতে পারেনি।
শহীদ মুশতাক একাদশের পক্ষে নাদিফ চৌধুরী সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন। ২৬ বলে খেলা তাঁর ইনিংসে ছিল ২টি চার ও ৪টি ছয়। তুষার ইমরান অপরাজিত ৪২ রান করেন। জবাবে শহীদ জুয়েল একাদশের হয়ে শাহরিয়ার নাফিস ৩৬ ও তালহা জুবায়ের ২৬* রান করলেও দলকে জয়ের পথে নিতে পারেননি।
বিজয় দিবসের এই ম্যাচে জয়-পরাজয়ের চেয়েও বড় হয়ে উঠেছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা আর ক্রিকেটারদের মিলনমেলা। বিজয়ের আনন্দে ডুবে থেকেই দুই দলের ক্রিকেটাররা খেলাটিকে উপভোগ করেছেন।