বিবস্ত্র করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে, সিমেন্টের ব্লকের আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে নান্নুসহ আসামিরা: র‍্যাব

প্রকাশিত: ১১:০৫ অপরাহ্ণ, জুলাই ১৫, ২০২৫

বিবস্ত্র করে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে, সিমেন্টের ব্লকের আঘাতে মৃত্যু নিশ্চিত করে নান্নুসহ আসামিরা: র‍্যাব

পুরান ঢাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে (৪৩) বিবস্ত্র করে এলোপাতাড়ি পেটানোর পর মৃত্যু নিশ্চিত করতে সিমেন্টের ব্লক দিয়ে আঘাত করা হয়। তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নৃশংস নির্যাতন চালাতে থাকেন মাহমুদুল হাসান মহিন ও সহযোগী মোহাম্মদ নান্নু কাজীসহ (৩৩) আসামিরা। নান্নু কাজীকে গ্রেপ্তারের পর আজ মঙ্গলবার র‍্যাব-১০ এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।

এর আগে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত ১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের বালিয়া গ্রাম থেকে ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যা মামলার অন্যতম এই আসামি নান্নু কাজীকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব-১১-এর একটি দল।

গ্রেপ্তারের পর র‍্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘রাতে যৌথ অভিযান চালিয়ে নান্নুকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমরা র‍্যাব-১০কে সহযোগিতা করেছি। এই বিষয়ে বিস্তারিত র‍্যাব-১০ থেকে জানানো হবে।’

র‍্যাব-১০ এর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্যবসার বিভিন্ন বিষয় ও এলাকার আধিপত্যকে কেন্দ্র করে আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) এর সঙ্গে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলে আসছিল সোহাগের। উল্লেখিত ঘটনার পূর্বে আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন বিভিন্ন সময় ভিকটিম সোহাগকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছেন। পরবর্তীতে ৯ জুলাই বিকেলে আসামি মাহমুদুল হাসান মহিনের সহযোগী আসামি নান্নু কাজীসহ অপর আসামিরা ভিকটিম সোহাগের ভাঙারির দোকান থেকে তাঁকে টেনে হিঁচড়ে বের করে আনেন। এরপর এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ভিকটিমকে টেনে হিঁচড়ে মিডফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর গেটের সামনে নিয়ে আসে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আসামিরা ভিকটিম সোহাগকে বিবস্ত্র করে হত্যার উদ্দেশ্যে লোহার রড, সিমেন্টের ব্লক ও ইট দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাতের মাধ্যমে রক্তাক্ত জখম করে ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এরপর মৃতদেহের পাশে প্রকাশে উল্লাস করে চলে যায়।

ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। এ হত্যা মামলায় নিহত সোহাগের বোন বাদী হয়ে ১৯ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

এদিকে, ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি মাহমুদুল হাসান মহিনকে আবারও ৫ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, জিজ্ঞাসাবাদে তাঁর কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। তবে মামলার মূল রহস্য ও এ মামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য তাঁকে আবারও রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন।

এই মামলায় গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে ১১ জুলাই আসামি টিটন গাজীকে ৫ দিন, ১২ জুলাই আলমগীর ও মনির ওরফে লম্বা মনিরকে ৪ দিন এবং ১৪ জুলাই সজীব বেপারী ও রাজিব বেপারীকে ৫ দিন করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

সবশেষ নান্নু কাজীসহ এ মামলায় মোট আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। বাকিরা হলেন— মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১), তারেক রহমান রবিন (২২), আলমগীর (২৮), মনির ওরফে লম্বা মনির (৩২), টিটন গাজী (৩২), দুই সহোদর সজীব ব্যাপারী (২৭) ও মো. রাজিব ব্যাপারী (২৫)।

এ সংক্রান্ত আরও সংবাদ

সর্বশেষ নিউজ