উপ-প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনারের পদত্যাগের পর নিজের কর্তৃত্ব পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিসভায় বড় ধরনের রদবদল এনেছেন। এ রদবদলে নতুন উপ-প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পর্যবেক্ষকরা একে স্টারমার সরকারের ১৪ মাসের অস্থিরতার পর একটি ‘বড় পরিবর্তন’ হিসেবে দেখছেন।
স্টারমার বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামিকে উপ-প্রধানমন্ত্রী পদে উন্নীত করেছেন। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেত্তে কুপার। আর কুপারের জায়গায় বিচারমন্ত্রী শাবানা মাহমুদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। তিনজনই স্টারমারের ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত।
রেনারের পদত্যাগ
অ্যাঞ্জেলা রেনার নতুন বাড়ির কর কম দেওয়ার কথা স্বীকার করার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। ব্রিটেনের স্বাধীন উপদেষ্টা লরি ম্যাগনুসের তদন্তে উঠে আসে, তিনি বিশেষজ্ঞ কর পরামর্শ না নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ নীতিমালা ভঙ্গ করেছেন। হোভে একটি ফ্ল্যাট কেনার সময় প্রায় ৪০ হাজার পাউন্ড স্ট্যাম্প ডিউটি এড়িয়ে গিয়েছিলেন। যদিও তদন্তে বলা হয়েছে, রেনার সততা ও জনসেবার প্রতি অনুকরণীয় প্রতিশ্রুতি নিয়ে কাজ করেছেন, তবুও নীতিভঙ্গের কারণে তাঁর পদত্যাগ অনিবার্য হয়ে পড়ে।
পদত্যাগপত্রে স্টারমারের কাছে ক্ষমা চেয়ে রেনার বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ কর পরামর্শ না নেওয়ার সিদ্ধান্তের জন্য আমি গভীরভাবে অনুতপ্ত।’ তিনি উপ-প্রধানমন্ত্রী ও আবাসন মন্ত্রীর পাশাপাশি লেবার পার্টির উপ-নেতার পদ থেকেও সরে দাঁড়িয়েছেন।
নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা
-
ডেভিড ল্যামি: উপ-প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। একইসঙ্গে বিচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বও পাচ্ছেন।
-
ইভেত্তে কুপার: অভিজ্ঞ লেবার রাজনীতিক, এখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
-
শাবানা মাহমুদ: ৪৪ বছর বয়সী এই নেতা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁকে অবৈধ অভিবাসন ও আশ্রয়প্রার্থী সংকটের মতো কঠিন ইস্যু মোকাবিলা করতে হবে।
রাজনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাভান্তার পরিচালক ক্রিস হপকিন্স রয়টার্সকে বলেন, “এই রদবদলে স্টারমার তাঁর মন্ত্রিসভার আনুগত্যকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তবে এখনও অনেকের কাছে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, তারা আসলে কী করতে চাইছে।”
রাজনৈতিক চাপ
রেনারের পদত্যাগে স্টারমারের ওপর নতুন চাপ তৈরি হয়েছে। সাম্প্রতিক জরিপে দেখা গেছে, নাইজেল ফারাজের নেতৃত্বাধীন পপুলিস্ট দল রিফর্ম ইউকে লেবার পার্টিকে পেছনে ফেলেছে। এক জরিপে রিফর্ম ইউকের সমর্থন ২৮ শতাংশ, আর লেবারের ২০ শতাংশ।
ফারাজ বলেন, লেবার সরকার বর্তমানে ‘গভীর সংকটে’ আছে এবং ২০২৭ সালের মধ্যেই নতুন নির্বাচন হতে পারে।