১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৫শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভারতে নারী সাংবাদিকদের সামনে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ে প্রশ্নের মুখে মুত্তাকি

admin
প্রকাশিত ১২ অক্টোবর, রবিবার, ২০২৫ ২৩:৪৬:৫৬
ভারতে নারী সাংবাদিকদের সামনে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী, মেয়েদের শিক্ষাবিষয়ে প্রশ্নের মুখে মুত্তাকি

Manual6 Ad Code

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | নয়াদিল্লি |
ভারতে সফররত আফগান তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি এবার নারী সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। রোববার (১২ অক্টোবর) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনে তাঁকে আফগান নারীদের শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে নিষেধাজ্ঞা নিয়ে একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়।

Manual4 Ad Code

এর আগে শুক্রবার দিল্লিতেই আয়োজিত আরেকটি তালেবান সংবাদ সম্মেলনে নারী সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল, যা নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

Manual8 Ad Code

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, রোববারের সংবাদ সম্মেলনে মুত্তাকিকে জিজ্ঞেস করা হয়—কেন আফগান মেয়েদের স্কুল ও বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘নারীদের শিক্ষা ইসলামি শরিয়তে হারাম নয়। তবে দেশের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত তা স্থগিত রাখা হয়েছে।’

Manual2 Ad Code

তিনি দাবি করেন, বর্তমানে আফগানিস্তানে প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে, এর মধ্যে ২৮ লাখ নারী ও কন্যা শিক্ষার্থী। মুত্তাকির ভাষায়, ‘কিছু এলাকায় সীমাবদ্ধতা আছে, তবে এর মানে এই নয় যে আমরা শিক্ষার বিরোধী।’

তবে তাঁর বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের পাল্টা প্রশ্ন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি

Manual8 Ad Code

২০২১ সালে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর থেকেই তালেবান সরকার নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনজীবনে অংশগ্রহণের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। মেয়েদের স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, পার্ক, জিমনেশিয়াম, এমনকি বিউটি সেলুনেও যাওয়া নিষিদ্ধ। ফলে আফগানিস্তানই এখন বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে রাষ্ট্রীয়ভাবে নারীদের মৌলিক অধিকার স্থগিত রয়েছে।

মুত্তাকি সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, আফগানিস্তানে বর্তমানে শান্তি বিরাজ করছে এবং “সময় গেলে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আসবে।” তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাঁর এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, “তালেবান শাসন নারীদের জীবনকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় ফেলেছে।”

এদিকে, শুক্রবারের বিতর্কিত ঘটনাটি নিয়েও তাঁকে প্রশ্ন করা হয়। জবাবে মুত্তাকি বলেন, “নারী সাংবাদিকদের বাদ দেওয়া ছিল প্রযুক্তিগত ত্রুটি। সাংবাদিকদের তালিকা খুব অল্প সময়ের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল।”

তবে বিশ্লেষকদের মতে, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জনের পথে তালেবানের প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের শরিয়া আইনভিত্তিক কঠোর নীতি। ক্ষমতায় আসার পর থেকেই তারা ষষ্ঠ শ্রেণির পর থেকে মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করে দিয়েছে।