মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য করা অনুরোধ বর্তমানে পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ভারত। বুধবার (২৬ নভেম্বর) নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এ তথ্য জানান।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ছাত্র আন্দোলনকারীদের হত্যাকাণ্ডে ভূমিকার অভিযোগে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে দু’দফায়—গত বছরের ডিসেম্বর এবং চলতি মাসে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর—প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠানো হয়। এসব অনুরোধ ভারতের বিদ্যমান বিচারিক ও আইনি কাঠামোর আওতায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে বলে জানান মুখপাত্র।
রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “হ্যাঁ, আমরা শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের অনুরোধ পেয়েছি এবং ভারতের চলমান বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের শান্তি, গণতন্ত্র, অন্তর্ভুক্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় ভারত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এ বিষয়ে আমরা সব অংশীজনের সঙ্গে গঠনমূলকভাবে সম্পৃক্ত থাকব।”
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশ ত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন শেখ হাসিনা। ওই সময়ের সহিংসতায় অন্তত হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি এবং বহু আহতের ঘটনা ঘটে।
জুলাই–আগস্টের সেই বিক্ষোভ দমনে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে তাঁর বিচার শুরু হয়। বিচার শেষে ১৭ নভেম্বর ঘোষিত রায়ে শেখ হাসিনা ও তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। একই মামলায় রাজসাক্ষী হওয়ায় সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
রায়ে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা ও কামালের সব সম্পদ বাজেয়াপ্ত করে জুলাই–আগস্ট বিক্ষোভে নিহতদের পরিবারের ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হবে।
মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন শেখ হাসিনা ও কামাল। এর আগে আদালত অবমাননার আরেক মামলায় গত ২ জুলাই শেখ হাসিনাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন একই ট্রাইব্যুনাল।
মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পরপরই বাংলাদেশ সরকার ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে শেখ হাসিনা ও কামালকে দেশে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানায়।